Jyotipriya Mallick : বনে গিয়েও ধান কিনতেন বালু,অরণ্য ভবন থেকে বালুর ৩০ কোটি টাকার সম্পত্তির নথি উদ্ধার হয়েছে, দাবি ইডি সূত্রে

0
189

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে, ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। কিন্তু প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী বন দফতরে গিয়েও ধান কিনতেন,তা কে কবে শুনেছে! 

রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দফতর রয়েছে সল্টলেকের অরণ্য ভবনে। প্রথম থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহ ছিল, অরণ্য ভবনে তল্লাশি চালালে কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু, এত কিছু পাওয়া যাবে, তা সম্ভবত নিজেরাও কল্পনা করতে পারেননি তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, অরণ্য ভবন থেকে রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিকের ৩০ কোটি টাকার সম্পত্তির নথি উদ্ধার হয়েছে।

তাঁর অফিসে হানা দিয়ে ইতিমধ্যে ১০ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত তথা ফিক্সড ডিপোজিটের সার্টিফিকেট পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই সঙ্গে পেয়েছে ৮০০টি পুরনো তারিখের স্ট্যাম্প পেপার।যা বিভিন্ন চুক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সব মিলিয়ে বাজেয়াপ্ত হওয়া আমানত, বিমা ও সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকার বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।

ইডি সূত্রের দাবি, এরই পাশাপাশি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে একশ জন চাষীর ধান কেনার চুক্তিপত্রও পাওয়া গিয়েছে। অর্থাৎ খাদ্য দফতর থেকে তাঁকে সরানো হলেও বালুর দেহ ও মন ছিল খাবারেই। খাদ্য-খাদকের জাল অরণ্য ভবন পর্যন্ত ছড়িয়েছিল। বন দফতরে বসেও চাষীদের থেকে ধান কিনতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। 

বালুর মধুমেহ তথা ডায়াবেটিস রয়েছে। রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। তাই এমনিতে ভাত কমই খেতেন। কিন্তু ইডির দাবি, জ্যোতিপ্রিয় চাষীদের থেকে যে ধান কিনতেন তার মধ্যে রহস্য রয়েছে। এ ব্যাপারে মোডাস অপারেন্ডি কী ছিল তা নিয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন ইডির অফিসাররা। তবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন, এই ধান কেনার কারবার ছিল আদতে কালোকে সাদা করার খেলা। চাষীদের ধান কেনা হত স্রেফ খাতায় কলমে। চাষীর গোলা থেকে সেই ধান বালুর গোলায় আসত না। বালু ছিলেন ইন্টারমিডিয়ারি। ধান কেনা হত কালো টাকায়, ধান বেচা হত সাদাতে। 

রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে এই কারবারের আরও গভীরে যেতে চাইছেন ইডি অফিসাররা। সিজিও কমপ্লেক্স সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রকৃত দুর্নীতির বহর আদতে হয়তো খুব বড়। তা গোড়ায় বোঝা যায়নি। যত গভীরে যাওয়া হচ্ছে, ততই দেখা যাচ্ছে, এর জাল অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁর অন্যান্য স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব পেয়েছে।

সেই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামে ব্যাঙ্কে স্থায়ী আমানত ও নগদের হদিশও পাওয়া গিয়েছে। তবে আদালতে পেশ করা চার্জশিটে ইডি জানিয়েছিল, প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ এখানেই সীমিত নয়। তাঁদের সন্দেহ ছিল তা নানা জায়গায় নামে বেনামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তারই তদন্তের নেমে এবার একের পর এক খোলস ছাড়িয়ে নতুন লিঙ্ক বের করতে শুরু করেছে ইডি।

সম্প্রতি রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় জ্যোতিপ্রিয় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ রেশন ডিলার তথা আটা ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১৬২ পাতার চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে ইডি।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয়র লাভ হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১০ কোটি টাকার বেশি পাওয়া গিয়েছে। তা ছাড়া চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা বাবদ রাজ্য সরকারের ৪৫০ কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের পকেটে গিয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন ইডি-র আধিকারিকেরা।

Previous articleMamata Banerjee – Narendra Modi: আপনার পা কেমন? কুশল বিনিময়ে প্রথম প্রশ্ন মোদীর, বাংলার বকেয়া নিয়ে মমতার কথা মন দিয়ে শুনলেন প্রধানমন্ত্রী
Next articlePicnic spot:বনগাঁ সীমান্তে নতুন পিকিনিক স্পট খোঁজ দিল দেশের সময়, বড় দিনের আগেই ভির জমাচ্ছেন অনেকেই: দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here