দেশের সময় , কলকাতা:রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চায় আদালত। তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য এবার মেডিক্যাল টেস্টের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের নির্দেশ, জেল কর্তৃপক্ষ যে কোনও জায়গা প্রাক্তন মন্ত্রীর শারীরিক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করাতে পারেন।
অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য অন্তত একমাসের জামিনে মুক্তির আর্জি জানিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়র আইনজীবী। ওই মামলাতেই মঙ্গলবার বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ এই নির্দেশ দিয়েছেন। দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করে ২ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় আদালতে সওয়াল করেন, প্রাক্তন মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। প্রতিদিন অবনতি হচ্ছে। কিডনির সমস্যা রয়েছে। যে কোনও চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করানো যেতে পারে। তাঁর আরও দাবি, এর আগে একটা পরীক্ষার জন্য প্রেসিডেন্সি জেলে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কাজ হয়নি। পাল্টা আবার ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদীর বক্তব্য, বাইরে পরীক্ষা করানোর আগে একবার দেখে নেওয়া দরকার জেল হাসপাতালেই পরীক্ষাগুলি করানো সম্ভব কি না। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের বালুর মেডিক্যাল টেস্টের অনুমতি দেন। দু’সপ্তাহ পর এই মামলার শুনানি।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় আনুমানিক প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি ইডির আধিকারিকদের। সেই দুর্নীতির তদন্তে নেমেই গত বছরের ২৭ অক্টোবর মাঝরাতে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বাড়িতে প্রায় ২১ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত ৩টে নাগাদ তৎকালীন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। রেশন দুর্নীতি মামলায় আটাকল মালিক বাকিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পরই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম সামনে আসে। এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়েছে। পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন রেশন দুর্নীতির গন্ধ প্রথম পান ইডি আধিকারিকরা। এরপর তাঁরা বাকিবুর রহমান নামে এক চালকল ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে। বাকিবুরকে জেরা করে প্রথম নাম উঠে আসে তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। গত বছরের ২৬ অক্টোবর গ্রেফতার হন তিনি। এর আগে একাধিকবার শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে জামিন চেয়েছিলেন বালু মল্লিক। তবে তা মঞ্জুর করেনি আদালত।