দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এনভি রামানার পর ভারতের ৪৯ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন উদয় উমেশ ললিত । আজ থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তিনিই। শপথ নিয়েই দেশের বিচারব্যবস্থায় বড় বদল আনার ঘোষণা করলেন বিচারপতি ললিত। প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁর মেয়াদকালের মধ্যে কী কী দায়িত্ব তিনি পালন করতে চান সে কথাও জানিয়েছেন তিনি।
নাম মনোনয়ন, নির্বাচন আগেই হয়েছিল।
শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন তিনি। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে আয়োজিত প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি ইউইউ ললিত জানিয়েছিলেন, সারা বছর যাতে অন্তত একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ চালু থাকে, তার চেষ্টা করবেন তিনি।
বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার প্রচেষ্টাও থাকবে। যে বিষয়গুলি অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য সেগুলি নিয়ে একটি ক্লিয়ারকাট ব্যবস্থা থাকবে। কোন মামলাগুলির শুনানি আগে দরকার সেগুলি খুঁজে বের করার জন্য নতুন ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। যাতে বৃহত্তর বেঞ্চ সহজেই রায় দান করতে পারে।
এনভি রামানার উত্তরসূরি হিসাবে প্রধান বিচারপতি ললিত এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের সব থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হওয়ার পর থেকে বিতর্কিত ‘তিন তালাক’ মামলা-সহ একাধিক যুগান্তকারী মামলায় রায় দিয়েছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চ ২০১৭ সালের অগস্টে ‘তিন তালাক’ প্রথাকে ‘অকার্যকর’, ‘অবৈধ’ এবং ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দেয়। এই সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্য ছিলেন ললিত। বিচারপতি ললিতের নেতৃত্বেই একটি বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, ত্রিবাঙ্কুরের রাজপরিবারেরই কেরলের ঐতিহ্যবাহী পদ্মনাভস্বামী মন্দির পরিচালনার অধিকার রয়েছে। এই বিশয়টি একসময় বিতর্ক বহদূর গড়িয়েছিল।
সর্বোপরি শিশুদের যৌন নিগ্রহ নিয়ে সেই বিতর্কিত রায় খারিজের পেছনেও ইউইউ ললিতই ছিলেন। ২০২১ সালে বম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্প গানেদিওয়ালা রায় দিয়েছিলেন, শিশুদের শরীর স্পর্শ না করলে তাকে যৌন নিগ্রহ বলা যাবে না। জামাকাপড়ের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে গোপনাঙ্গ স্পর্শ করলে তবেই তাকে যৌন নিগ্রহের আওতায় ফেলা যাবে। এই রায় নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় দেশে।
বিচারপতি গানেদিওয়ালার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলায় তিন বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন উদয় উমেশ ললিত। বম্বে হাইকোর্টের রায়কে ‘অযৌক্তিক’ বলেছিলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়কে খারিজ করে দিয়েছিল।