দেশের সময় ,কলকাতা: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টে । ২০১৬ সালের প্যানেলের ৩৬ হাজার নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ইন্টারভিউতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকী নিয়োগ পরীক্ষায় অ্যাপটিটিউড টেস্টও নেওয়া হয়নি বলে সাক্ষ্য দিয়ে জানিয়েছেন ইন্টারভিউয়াররাই।
তবে বিচারপতি নির্দেশে জানিয়েছেন, যে প্রার্থীরা চাকরি পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদের চাকরি থাকবে৷ একই সঙ্গে বিচারপতি অবশ্য জানিয়েছেন, এখনই কারও চাকরি যাবে না৷ প্রশিক্ষণবিহীনরা আগামী চার মাস চাকরি করবেন৷ তবে পার্শ্ব শিক্ষকদের স্তরে বেতন পাবেন৷ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মের জন্য সংসদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকেই দায়ী করেছেন বিচারপতি৷ নির্দেশ দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, সরকার মনে করলে মানিক ভট্টাচার্যের থেকে টাকা নিয়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা করবে৷
নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত ১৪০ জন হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন-সহ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। তার পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্যানেল বাতিল করে ‘ঢাকি সমেত বিসর্জন’-এর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিল করে দেবেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমি ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।’’
২০১৬ সালের টেট পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োপগ দুর্নীতিতে অনেক ক্ষেত্রেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ কিন্তু এত বিপুল পরিমাণ বাতিল আগে হয়নি।
সাত’বছর আগের টেটের নিয়োগে দুর্নীতি রয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তবে তিনি বলেছিলেন, এই প্যানেলের ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু সবাই যে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন তা নয়। কেউ কেউ পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতেও চাকরি পেয়েছেন।
সাত’বছর আগের টেটের নিয়োগে দুর্নীতি রয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তবে তিনি বলেছিলেন, এই প্যানেলের ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু সবাই যে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন তা নয়। কেউ কেউ পরীক্ষা দিয়ে মেধার ভিত্তিতেও চাকরি পেয়েছেন।
তিনি আদালতে বলেন, যাঁরা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করা হোক। এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এর আগে এই মামলার শুনানিতেই আধ ঘণ্টার নোটিসে জেল থেকে হাইকোর্টে ডাকিয়ে আনা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যকে। সেদিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যানকে দেখা গিয়েছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা করেও কথা বলতে।
সেদিন মানিকের থেকে যা জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি, জবাবে পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক বলেছিলেন, তথ্য দেখে সবটা বলতে হবে। এও বলেছিলেন, ‘আপনি আমায় আধঘণ্টা আগে ডাকবেন, আমি চলে আসব।’
এরমধ্যে সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। শীর্ষ আদালত স্পষ্টই বলেছে, ওএমআর শিট জালিয়াতিতে আসল মাস্টারমাইন্ড ছিলেন মানিকই। দেখা গেল তাঁর সময়ে হওয়া ২০১৪-র টেটে এদিন জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।