দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আসানসোলে কম্বল বিতরণের ঘটনায় নিরীহ মানুষের প্রাণ যাওয়ায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
তাঁকে দিল্লির উপকণ্ঠে নয়ডার যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সম্ভবত স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারিকে নিয়ে আগ্রা যাচ্ছিলেন জিতেন্দ্র। সেই সময়েই তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ওই কম্বল বিতরণের ঘটনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দু অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই ঘটনা ঘটে।
এদিন জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করার পর তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে তখন তাঁকে দিল্লি বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে এদিন প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, “প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে। সেই কারণেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা গ্রেফতার করার মতো ঘটনা নয়।”
তবে গ্রেফতারি নাকি আটক তা নিয়েও একটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় আগেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি গ্রেফতার হওয়ার এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময় আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুরক্ষাকবচও নেন। তবে সেই সুরক্ষাকবচ ২১ দিনের জন্য ছিল। তারপর আগাম জামিনের আবেদন করলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
সূত্রের খবর, এরপর দিল্লিতে যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শনিবার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর এবং আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছে বিজেপি।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “যার পরিবার বস্ত্রদান অনুষ্ঠানে জামা কাপড় নিতে এসেছিল, সে সুপ্রিম কোর্ট অবধি যাচ্ছে আইনজীবী নিয়ে জিতেন তিওয়ারিকে গ্রেফতার করতে। হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যিনি আইনজীবী হন, তার কী ফিজ হয় সকলেই জানেন। যে ব্যক্তি এই টাকা দিতে পারছেন, তিনি পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে লাইন দেন কখনও? এটা পুরোপুরি তৃণমূল কংগ্রেসের চক্রান্ত।”
একইসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, কিছুদিন আগে জিতেন্দ্র তিওয়ারির বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। তাও রাতেরবেলা। সিসিটিভি ফুটেজও আছে। সার্চ করা বা এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে যাতে তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে যান, দাবি সুকান্তের। বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, মানসিক চাপ তৈরি করার জন্য এসব করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও চৈতালি তিওয়ারি কম্বল বিতরণের মামলায় আগাম জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আগামী সপ্তাহে শুনানিরও কথা ছিল। সূত্রের খবর, জিতেন্দ্র-চৈতালি একসঙ্গে থাকলেও চৈতালিকে বাদ দিয়েই জিতেন্দ্রকে ধরা হয়।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “গ্রেফতার না আটক সে তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ তবে যে ঘটনা তারা শুরু করেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কম্বল নিয়ে তাতে গ্রেফতার হওয়া উচিত। নিজেরা নিজেদের মতো করে বিশৃঙ্খলা করলেন। উদ্ধার কাজে সাহায্য করেননি। আগেই গ্রেফতার হওয়া উচিত ছিল। গ্রেফতার হওয়ার মতো অপরাধ ছিল।”
প্রসঙ্গত, আসানসোলে কম্বল বিতরণের ঘটনায় মর্মান্তিক হলে পরদিন এর সমালোচনা করেছিলেন দিলীপবাবু। তিনি বলেছিলেন, এ ভাবে কম্বল বিতরণ করে গরিবের কোনও উপকার হয় না। এ সব করা ঠিক নয়।