Jessore Roadমাথায় ঝুলছে মরা ডাল ,তার উপরে ঝড়ের আতঙ্ক নিয়ে যশোর রোডে ঝুঁকির যাত্রা বনগাঁয়

0
5
পার্থ সারথি নন্দী , দেশের সময়

বনগাঁ: গাছের পেল্লায় ডাল ভেঙে কখনও ট্রাকের উপরে , কখনওবা অটোর উপরে পড়ে যশোর রোডে মৃত্যু হয়েছে পথ চলতি বহু সাধারণ মানুষের। সেই সমস্ত দুর্ঘটনার পরে স্থানীয়বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন , যশোর রোডের দু’পাশে থাকা বহু বছরের পুরনো গাছগুলির মরা এবং শুকনো বিপজ্জনক ডাল কেটে ফেলা হোক। একই সঙ্গে যশোর রোডের গাছগুলির উপযুক্ত পরিচর্যারও দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ।

এবার  সেই একই দাবি আরও জোড়াল ভাবে তুলেছেন বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আবহাওয়া সূত্রের খবর ,ফের ঝড়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ।সেটি এখন সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়ে কঙ্কন উপকূলে অবস্থান করছে। ২৭ মে সেটি আরও শক্তিশালী হবে। যদি ফের  ঘূর্ণী ঝড় হয় তাহলে যশোররোডের উপরে মাথায় ঝুলছে মরা ডাল, সেই সব শুকনো ডাল ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে । সেই আতঙ্ককে সঙ্গী করে যশোর রোডে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে নিত্য যাতায়াত । তাঁদের দাবি অতি শীঘ্র বিপজ্জনক মরা ডাল কেটে দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।

ঠিক কী বলছেন বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ ও পুর প্রধান গোপাল শেঠ।

বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন , আমরা পঞ্চায়েতগত ভাবে বহুবার এন এইচ (NH 34) -এর কাছে আবেদন করেছি এই বিপজ্জনক গাছের শুকনো ডালগুলি অবিলম্বে কেটে দেওয়া হোক যাতে বড়সড় দুর্ঘটনা না ঘটে । সামনে যে ঘূর্ণীঝড় আসছে তার আগে এন এইচ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক ।

বনগাঁর পুরপ্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘যশোর রোডে বেশ কিছু গাছে শুকনো, মরা ডাল বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে তা ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। ওই সব ডাল কাটতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।’’

বনগাঁর পরিবেশ কর্মীদের কথায়,ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, যশোর রোডের জনক কালী পোদ্দার তৎকালীন সময়ে রাস্তা এবং গাছের যত্নের জন্য বার্ষিক অর্থ বরাদ্দ করতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে শতাব্দী প্রাচীন গাছের যত্ন নিতে দেখা যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘এই শিরীষ এবং খিরিষ গাছগুলি সর্বোচ্চ চার-পাঁচশো বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। খুব স্বাভাবিক, এরই মাঝে তাদের বহু শাখা, ডাল শুকিয়ে মরে যাবে। নুতন শাখা, ডাল তৈরি হবে। সে দিকে খেয়াল রেখে মাঝে মধ্যে মরা ডাল কেটেছেঁটে দেওয়া দরকার। সেটা হয় না বলেই মাঝে মধ্যে ডাল ভেঙে দুর্ঘটনা হয়। প্রাণহানি হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নিজেদের অজ্ঞতা, উদাসীনতাকে আড়াল করার জন্য গাছেদের খলনায়ক বানাই।’’

যশোর রোডে বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত প্রায় ষাট কিলোমিটার পথে কিছু শুকনো মরা ডাল বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে আছে বলে অভিযোগ। ওই পথে এর আগে বহুবার গাছের ডাল ভেঙে মানুষের মৃত্যু বা জখম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষ ও যান চালকেরা শুকনো ডাল কাটার দাবি তুলে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অতীতে কিছু ডাল কাটাও হয়েছিল। অভিযোগ, নিয়মিত ভাবে মরা শুকনো ডাল কাটার ব্যবস্থা করা হয় না।

প্রাচীন গাছগুলির রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। গাছের গায়ে ঘুঁটে দেওয়া হয়। গোড়ায় গরম চা, জল, আবর্জনা ফেলা হয়। গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি রয়েছে কাঠ চোরদের দৌরাত্ম্য। এসবের কারণে গাছ ও ডাল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট যশোর রোডের বেশ কিছু গাছ চিহ্নিত করে দিয়েছে। সেই সব গাছের শুকনো মরা ডালও কাটা যাবে না। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের চিহ্নিত করে দেওয়া গাছগুলি বাদ রেখে বাকি গাছের শুকনো মরা ডাল কাটার বিষয়ে বন দফতরের সঙ্গে যৌথ সমীক্ষা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

Previous articleWeather Update শক্তি বাড়াচ্ছে নিম্নচাপ, আগামী সপ্তাহে মুষলধারে বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণের ৬ জেলায় , চলবে কতদিন জানুন 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here