দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভয়াবহ ভূমিকম্প ইন্দোনেশিয়ায় ! এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫০ জনের। ঘরবাড়ি ভেঙে জখম হয়েছেন আরও অনেকে। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁদের।

জানা গেছে, রিখটার স্কেলে ৫.৬ মাত্রার তীব্র কম্পন ধরা পড়ে এদিন। ভারতীয় সময় অনুযায়ী আজ, সোমবার সকালে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। কয়েক সেকেন্ডের এই কম্পনেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বহু বাড়িঘর। ঘর থেকে বেরোনোর সময়ই পাননি কেউ, রীতিমতো জীবন্ত চাপা পড়ে প্রাণ চলে যায় অন্তত ৪৪ জনের।

জানা গেছে, ভয়াবহ এই কম্পনের উৎসস্থল পশ্চিম জাভার সিয়ানজুরে শহর। কম্পনের পরেই আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বহু মানুষ। খালি করে দেওয়া হয় অফিস, আবাসসন, স্কুল, কলেজ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা তেমন বেশি না হলেও, বড় মাপের ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সেই দেশের জাতীয় বিপর্যয় সংস্থা জানিয়েছে, সিয়ানজুর এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ মূল্যায়ন করছেন। স্থানীয় টিভি চ্যানেলের ফুটেজে দেখা গিয়েছে সিয়ানজুরের বেশ কিছু ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সিয়ানজুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বড় মাপের কম্পন অনুভব করেছেন তাঁরা। এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি অফিসে ছিলেন। পায়ের নিচের মাটি আচমকা থরথর করে কাঁপতে শুরু করেছিল। তিনি প্রথমে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসেছিলেন। নড়তে পারেননি। কিন্তু, তাঁর হুশ ফেরার পরও মাটি কাঁপছিল। বেশ কয়েক সেকেন্ড ধরে চলে কম্পন, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা। দীর্ঘ কম্পনের জেরে অনেকে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন, অনেকে বমি করে ফেলেছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। মূল ভূমিকম্পটির পরের দুই ঘণ্টায় আরও ২৫টি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।

সিয়ানজুর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তাতেও এই জোরালো কম্পন অনুভব করা গিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছে, বহু মানুষকে বহুতল ছেড়ে আতঙ্কে নীচে নেমে এসেছেন। জাকার্তার সেন্ট্রাল প্লাজায় ইন্দোনেশীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতরের বাইরেও সেনা কর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। ইন্দোনেশিয়া “প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার”-এ অবস্থিত। এটি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। পৃথিবীর ভূত্বকের বিভিন্ন টেকটোনিক প্লেটগুলি এই বলয়কে ঘিরেই মিলিত হয়। তাই প্রচুর পরিমাণে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরিতে অগ্নুৎপাত ঘটতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারও জোরদার ভূকম্পন হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। রিখটার স্কেলে তীব্রতা ছিল ৬.৯। কিন্তু সেদিন কোনও ক্ষয়ক্ষতি সেভাবে হয়নি। আজ কম্পনের মাত্রা কম হওয়া সত্ত্বেও বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ল ইন্দোনেশিয়া।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here