
‘ভারতের হকের জল এখন ভারতেই থাকবে। ভারতের কথাতেই বইবে ভারতের জল।’ নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবিপি নেটওয়ার্ক আয়োজিত এক সম্মেলনে পাকিস্তানের নাম না করেই প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘আগে ভারতের জল বাইরে যেত। এখন এটি ভারতের স্বার্থে ব্যবহার করা হবে এবং দেশের জন্য ব্যবহার করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে, আমাদের নদীর জল উত্তেজনা এবং সংঘাতের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকার, রাজ্য সরকারগুলির সহযোগিতায়, নদীগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য একটি বিশাল উদ্যোগ শুরু করেছে। কেন-বেতওয়া লিঙ্ক প্রকল্প এবং পার্বতী-কালিসিন্ধ চম্বল লিঙ্ক প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ কৃষক উপকৃত হবেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “গত দশ বছরে আমাদের সরকার একের পর এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলি দেশের স্বার্থে নেওয়া হয়েছিল। আগে বড় কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ভাবা হত, ‘বিশ্ব কী বলবে।’ ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য বহু বড় সংস্কার আটকে গিয়েছিল। এই ভাবে কোনও দেশ এগোতে পারে না।”

মোদীর বক্তব্য, “কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র মানদণ্ড হওয়া উচিত দেশের স্বার্থ। গত এক দশকে আমরা সেই পথেই চলেছি এবং তার ফলও দেখা যাচ্ছে। যেসব বড় সিদ্ধান্ত দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল, সেগুলি আমরা বাস্তবায়িত করেছি।”
পহেলগাম সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সঙ্গে ছয় দশকের পুরনো সিন্ধু জল চুক্তি রদ করেছে ভারত। ইতিমধ্যে চেনাব নদীর উপর বাগলিহার এবং সালাল বাঁধ থেকে পাকিস্তানে জলপ্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। প্রস্তুতি চলছে ঝিলাম নদীর উপর কিষাণগঙ্গা প্রকল্প থেকে জলপ্রবাহ কমানোর। এই প্রেক্ষাপটেই সোমবার সন্ধ্যায় এমন মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় হয়েছিল সিন্ধু জল চুক্তি। এই চুক্তি অনুসারে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রবাহিত ছয়টি নদী — সিন্ধু, ঝিলাম, চেনাব, রাভি, বিয়াস এবং শতদ্রু নদীর জলের কে কত ভাগ পাবে, তা ঠিক হয়। ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের তীব্র উত্তেজনার মধ্যেও এর আগে কখনও সরকারি ভাবে এই চুক্তি রদ করা হয়নি। এমনকী, কার্গিল যুদ্ধের সময়ও নয়। তবে এ বার পহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে এই কৌশলগত পদক্ষেপ করেছে ভারত সরকার।
