
দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনে জৈব ও রাসায়নিক মারণাস্ত্রে প্রয়োগ করবে বলে শাসানি দিয়েছে রাশিয়া, এমন খবরই সামনে এনেছিল আমেরিকা। সেই নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে ৷ রাসায়নিক মারণাস্ত্রের প্রয়োগ হলে কী ভীষণ ধ্বংসলীলা হতে পারে সে ভেবেই আতঙ্ক বাড়ছে। আমেরিকা জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া যদি জৈব অস্ত্রের প্রয়োগ করে তাহলে ফল ভাল হবে না। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হযে যেতে পারে। রাসায়নিক ও জৈব অস্ত্রের তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারতও। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পারিষদে রাসায়নিক অস্ত্র বন্ধের দাবি জানিয়ে সওয়াল করেছে ভারত।

সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পারিষদে ভারত জানিয়েছে, জৈব ও রাসায়নিক মারণাস্ত্র ধ্বংস ডেকে আনবে। এই ধরনের অস্ত্র বিশ্বজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালাবে। কোনওভাবেই যুদ্ধে বিষাক্ত জৈব অস্ত্র বা রাসায়নিক মারণাস্ত্রের প্রয়োগ হওয়া উচিত নয়।

ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়া জৈব ও রাসায়নিক মারণাস্ত্রের প্রয়োগ করতে পালে বলে জল্পনা চলছে। ইউক্রেন দাবি করেছে রাশিয়া তলে তলে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের প্রস্তুতি চালাচ্ছে। অন্যদিকে মস্কোর দাবি, আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাসায়নিক মারণাস্ত্র প্রয়োগের কথা ভাবছে ইউক্রেনই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া যদি ঘুণাক্ষরেও রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের (কথা ভাবে, তাহলে বড় মূল্য চোকাতে হবে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।

যদিও আমেরিকার দাবি উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছে, ইউক্রেনকে রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে আমেরিকা। ইউক্রেন ও আমেরিকা যৌথভাবে জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে। গোটা বিশ্বের নজর রাশিয়ার দিকে ঘোরাতেই মিথ্যা প্রচার করছে আমেরিকা। তাদের আরও দাবি, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের রেকর্ড আগে থেকেই আছে আমেরিকার। ২০১৮ সালে মস্কো দাবি করেছিল জর্জিয়ার একটি ল্যাবরেটরিতে রাসায়নিক ও জৈব মারণাস্ত্রের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছিল আমেরিকা। যদিও এই দাবি অস্বীকার করে মার্কিন প্রশাসন।

আলোচনা চললেও আপাতত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার ইঙ্গিত নেই। তবে গোলাগুলির মাঝেই ভয়-উদ্বেগ বাড়িয়েছে অন্য অস্ত্র। এই অস্ত্র ব্যবহার হলে এক নিমেষে প্রাণ হারাতে পারেন লক্ষাধিক মানুষ। যারা প্রাণে বাঁচবেন, তাদের পরবর্তী কয়েক প্রজন্মকেও ওই অস্ত্রের ফলে তৈরি প্রতিক্রিয়ার ফল ভুগতে হবে। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে যাতে জৈব ও বিষাক্ত অস্ত্র ব্যবহার না করা হয়, সেই আর্জিই জানাল ভারত ৷

শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভারতের তরফে বলা হয়, যুদ্ধে যাতে জৈব অস্ত্র ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
শুক্রবারই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিরস্ত্রকরণ বিষয়ক বিভাগের সেক্রেটারি জেনারেল ইজ়ুমি নাকামিৎসু ইউক্রেনে জৈব অস্ত্র সংক্রান্ত গতিবিধির কথা উল্লেখ করেন। সেই প্রসঙ্গেই ভারতের তরফে বলা হয়, “ভারত বৈষম্যহীন নিরস্ত্রকরণের ক্ষেত্রে জৈব ও বিষাক্ত অস্ত্রগুলিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে, কারণ এই শ্রেণির অস্ত্র বিশ্বজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালাতে পারে।”
