Hug: পাকিস্তানের কাছে দশ উইকেটে লজ্জার হার কোহলিদের, তারপর যেভাবে বিরাটের ছবি ভাইরাল হল

0
472

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্বকাপে অপরাজিত তকমা খোয়াল ভারত। ১৩-০ নয়, হল ১২-১। রবিবার দুবাইয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে লজ্জার হার ভারতের। ১৩ বল বাকি থাকতেই জয়ের রানে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। অপেক্ষার অবসান। ১২ ম্যাচ পর বিশ্বমঞ্চে জয় পাকিস্তানের। বিনা উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তোলে বাবর-রিজওয়ান জুটি। শুরুটা করেন শাহীন। শেষটা বাবর, রিজওয়ানের। ‘যদি প্রত্যাবর্তন চাও, সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দাও।’ এই মন্ত্র নিয়েই বোধহয় রবিবাসরীয় রাতে মাঠে নেমেছিল বাবর আজম অ্যান্ড কোম্পানি। প্রথমে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ ভেঙে দেওয়ার পর, ভারতের বোলারদের গুঁড়িয়ে দিলেন বাবর-রিজওয়ান জুটি। 

হাইভোল্টেজ ম্যাচ। চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার আঁচ। পৃথিবীর যে প্রান্তেই যখনই মুখোমুখি  হোক ভারত, পাকিস্তান, টেনশন থাকবেই । কিন্তু ওই লড়াইয়ের সময়টুকুই। মাঠের লড়াই মাঠেই শেষ। এক শিবিরের হয়তো বিজয়োল্লাস, উল্টো ক্যাম্পে হতাশার আবহাওয়া। বড় জোর এটুকু। তারপর হাসতে হাসতে পাশাপাশি দুদলের হাত মিলিয়ে মাঠছাড়া।

তার মধ্যেই গতকালের এক টুকরো ছবি ভাইরাল হল। পাক অধিনায়ক বাবর আজম, উইকেটকিপার ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ানেরর দাপুটে ব্যাটিংয়ে এই প্রথম টি ২০ বিশ্বকাপের কোনও ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান। ১৩ বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে বাবর-বাহিনী ভারতকে দাঁড়াতেই দিল না।  কিন্তু মাঠ ছাড়ার সময় রিজওয়ানকে বুকে টেনে নিয়ে  সবার মন  জয় করে বিরাট বড় খেলোয়াড়ি মানসিকতার পরিচয় দিলেন ভারত অধিনায়ক । বাবর ৬৮, রিজওয়ান ৭৮ রানে নট আউট থেকে গেলেন।  দুজনকেই অভিনন্দন  জানালেন বিরাট কোহলি। উপমহাদেশের দুই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের মধ্যেই এই দারুণ দৃশ্যের প্রশংসায় সরব দুদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাই । তাঁদের প্রতিক্রিয়া দেখুন।

উল্লেখ্য, রোহিত, রাহুল, বিরাট..ভারতের তিন সেরা ব্যাটারকে আউট করে টিম ইন্ডিয়ার শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছিলেন শাহীন আফ্রিদি। বিশ্বকাপের মঞ্চে এই তিনজনকে প্যাভিলিয়নে ফেরানো যেকোনও বোলারের স্বপ্ন। এদিন দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরুতেই মরুঝড়। ঝড়ের নাম শাহীন। সেটা সামলে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান কোহলি-পন্থ। ক্যাপ্টেনস ইনিংস বিরাটের। তাঁর ব্যাটে ভর করেই লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছয় ভারত। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতা। পাকিস্তানের ওপেনিং জুটিই ভাঙতে পারেনি বুমরা, শামিরা। গ্যালারিতে বসে ভারতের হার দেখলেন অক্ষয় কুমার, প্রীতি জিন্টারা। পাকিস্তান ক্রিকেটের পুনর্জন্ম দেখল মরুশহর। রবি রাতে দুবাইয়ের গ্যালারির রং সবুজ। 

টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় পাকিস্তান। মাত্র ১ রানে প্রথম উইকেট। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে আউট রোহিত শর্মা। শাহীন আফ্রিদির ইয়র্কার বলে প্লাম্প এলবিডব্লু। প্রথম বলেই শূন্য রানে আউট রোহিত। দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে কেএল রাহুলকে প্যাভিলিয়নে ফেরান শাহীন আফ্রিদি। পাকিস্তান ফাস্ট বোলারের গতিতে পরাস্ত হয় ভারতীয় ওপেনার। মিডল স্ট্যাম্প উড়ে যায় ফর্মে থাকা রাহুলের। মাত্র ৬ রানে দু’উইকেট হারায় ভারত। এই পরিস্থিতিতে ইমাদ ওয়াসিমকে ছয় মেরে শুরুটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করেছিলেন সূর্যকুমার। কিন্তু বেশিক্ষণ উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি। ৫.৪ ওভারে মাত্র ৩১ রানে তিন উইকেট হারায় ভারত। হাসান আলির বলে খোঁচা মেরে রিজওয়ানের হাতে ধরা পড়েন সূর্যকুমার। নিজের ১০০তম ক্যাচ নেন পাকিস্তানের উইকেট কিপার। ৬ ওভারের শেষে ৩ উইকেট খুইয়ে ভারতের স্কোর ছিল ৩৬।

টিম ইন্ডিয়ার টপ অর্ডার টোটাল ফ্লপ। রোহিত (০), রাহুল (৩), সূর্যকুমার (১১)। শেষ কোন ম্যাচে এই স্কোরলাইন দেখা গিয়েছে বলা মুশকিল। যার ফলে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই ক্রিজে আসতে হয় ঋষভ পন্থকে। শুরুতেই তিন উইকেট পড়ে যাওয়ায় খোলসের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল ভারত। শাহীনের বলে নিজের প্রথম ছয় মেরে কিছুটা চাপমুক্ত হন বিরাট। পন্থ নেমেই নিজের বেপরোয়া ক্রিকেট বজায় রাখে। ৯ ওভারে ৫০ রানের গণ্ডি পেরোয় ভারত। ১০ ওভারের শেষে টিম ইন্ডিয়ার রান ৬০। কোহলি-পন্থ মিলে দলকে ভদ্রস্থ রানে পৌঁছে দেওয়ার লড়াই চালায়। 

শিট অ্যাঙ্কারের ভূমিকা নেন বিরাট। অন্য দিকে নিজের শট খেলছিলেন ঋষভ। হাসান আলিকে এক হাতে ব্যাক টু ব্যাক দুটো ছক্কা হাঁকান ভারতের উইকেটকিপার ব্যাটার। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ রান যোগ করেন কোহলি-ঋষভ জুটি। ঠিক যখন মনে হয়েছিল ধোনির উত্তরসূরী ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনবে, তখনই সাদাবের বলে ব্যাক্তিগত ৩৯ রানে একটা বাজে শট খেলে আউট হন পন্থ। ১২.২ ওভারে ৮৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত। ১৫ ওভারে একশো রানে পৌঁছয় কোহলিরা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও একটা দারুণ ইনিংস ভারতের নেতার। একদিকে উইকেটের ধসের মধ্যে অন্য প্রান্ত ধরে রাখেন বিরাট। ৪৫ রানে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই বিরাটকে প্যাভিলিয়নে ফেরান সেই শাহীন। ক্যাপ্টেনস ইনিংস খেলে ৫৭ রানে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন কোহলি। ফিনিশার হিসেবে নেওয়া হয়েছিল হার্দিক পণ্ডিয়াকে। কিন্তু ব্যর্থ ভারতের বিগ হিটার। ৮ বলে ১১ রান করে আউট হন। ৭ উইকেট খুইয়ে ১৫১ রানে শেষ করে ভারত। 

রান তাড়া করতে নেমে একেবারে পারফেক্ট শুরু করে পাকিস্তান। বিনা উইকেট হারিয়ে ওপেনিং জুটিতে ৫০ রান তোলেন রিজওয়ান এবং বাবর। প্রথম দু’ওভারে বল কিছুটা সুইং করলেও পরের দিকে শিশির বড় ফ্যাক্টর হয়ে যায়। পাকিস্তানের ওপেনিং পার্টনারশিপ ভাঙতে হিমশিম খায় বুমরা,শামি,ভুবনেশ্বররা। টি-২০ তে ভারতের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের রেকর্ড সৃষ্টি বাবর-রিজওয়ানের। ৪০ বলে নিজের অর্ধশতরান তুলে নেন পাক অধিনায়ক। ১২.২ ওভারে বিনা উইকেট খুইয়ে ১০০ রানে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। বাকিটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ভারতীয় বোলারদের রেয়াত করেনি বাবররা। ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন পাক অধিনায়ক। ৭৯  রানে নট আউট রিজওয়ান। টি-২০ ক্রিকেটে ভারতের বিরুদ্ধে যেকোন দলের এটাই সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। বিশ্বমঞ্চে ভারতের দশ উইকেটে হারও এই প্রথম।

Previous articleWest Bengal Weather: বাংলার আবহাওয়ায় বড় পরিবর্তন এই সপ্তাহেই! হাওয়া অফিস যা জানাল
Next articleদেশে ১০০ কোটি টিকাকরণে দাবি আসলে জুমলা, বিস্ফোরক মমতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here