

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতার বাজারে আসতে চলেছে পদ্মার ইলিশ। সোমবার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে।এবছর বাংলাদেশ পুজোর উপহার হিসাবে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পুজোর আগে পদ্মার ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী পুজোর আগে এক মাসের মধ্যে গড়ে ২,০০০ থেকে ২২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিত বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রক। প্রতিবছর এই রপ্তানি চলে ২০২৩ সাল পর্যন্ত।

গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে শেখ হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। ক্ষমতা দখল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এরপরই ওই দেশে ভারত বিরোধী আন্দোলনের জেরে দুদেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। গত বছর ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ইলিশ আমদানির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। অনেক অনুরোধের ভিত্তিতে ওই দেশের সরকার ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি অনুমতি দেয়। কিন্তু এক মাস সময়সীমার মধ্যে এপারের মাছ ব্যবসায়ীরা মাত্র ৫৭৭ মেট্রিক টন মাছ আমদানি করতে পেরেছিলেন।

গত জুলাই মাসে ফের ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ইলিশের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানায়। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছরে ১২০০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেয়। সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রকের চিঠি হাতে পায় এপারের মাছ ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ১১ ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ওই দেশের মাছ ব্যবসায়ীরা আবেদন করতে পারবেন।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী শনিবার থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকতে পারে ইলিশ ভর্তি ট্রাক। ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন পুজোর আগে ইলিশ রপ্তানিতে বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দেওয়ায় আমরা খুশি। এবারে পুজো এগিয়ে আশায় আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশ আসতে শুরু করবে।

এবছর বর্ষায় রাজ্যের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে ইলিশ উৎপাদন কম। ঘাটতি মেটাতে জায়গা করে নিয়েছে গুজরাটের ভারুচের ইলিশ। সাধ্যের মধ্যে দাম হওয়ায় বাজারে দেদার বিক্রি হয়েছে এই ইলিশ।
ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদকের কথায়, আর কিছু দিনের মধ্যেই বাঙালির রসনা মেটাতে এপার বাংলার বাজারে আসতে চলেছে পদ্মার রুপোলি শস্য। মাছ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দাম একটু বেশি হলেও পুজোর সময় ইলিশের বিভিন্ন আইটেম খাওয়ার আনন্দ চেটেপুটে উপভোগ করতে কার্পণ্য করবেন না খাদ্যরসিক বাঙালি।