দেশের সময়় ওয়েবডেস্কঃ নজরে ছিল নরেন্দ্র মোদীর গুজরাতের আসন্ন বিধানসভা ভোট। অবশেষে বৃহস্পতিবার গুজরাতে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন । মোদী-অমিত শাহর রাজ্য গুজরাতে ভোট হবে ১ ডিসেম্বর ও ৫ ডিসেম্বর। ভোটের ফল ঘোষণা হবে ৮ ডিসেম্বর।
গুজরাত বিধানসভায় মোট আসনের সংখ্যা ১৮২টি। গুজরাত বিধানসভা ভোটকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচার এখন তুঙ্গে। বিজেপির পাশাপাশি আপও গুজরাতের আসন্ন ভোটকে পাখির চোখ করে সর্বশক্তি নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়েছে। ইতিমধ্যেই আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ওই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলি নিয়ে চলছে বিতর্ক। বিজেপি, আপ ছাড়া গুজরাত বিধানসভা ভোটে জোরকদমে প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই গুজরাতের মোরবি জেলায় ব্রিজ ভেঙে পড়ে। রবিবার সন্ধ্যাতেই গুজরাতের মোরবিতে সেতু ভেঙে পড়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে সেখানে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেন। এই পরিস্থিতিতে মোরবির ঘটনা গুজরাত ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
গুজরাত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। এ বারের নির্বাচনে কয়েকপ্রস্থ নতুন ব্যবস্থার কথা জানিয়ে তিনি ঘোষণা করেছেন, ৫ নভেম্বর প্রথম দফার ভোট গ্রহণের জন্য নোটিফিকেশন হবে। দ্বিতীয় দফার ভোটের মনোনয়ন পেশের জন্য নোটিফিকেশন জারি হবে ১৪ নভেম্বর।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ হল, নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করার আগেই এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের সরাসরি অভিযোগ, গুজরাতের ভোটের দিন ঘোষণা করা নিয়ে টালবাহানা করে আসলে বিজেপিকে সুবিধা করে দিয়েছে কমিশন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকেও রাজীব কুমারকে সে বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গুজরাত বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে। তার ১১০ দিন আগে সেখানে ভোট করানো হচ্ছে। সুতরাং দেরি হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠছে তা ঠিক নয়।
রাজীব কুমারের জবাব থেকে এদিন অনেকেরই এই ধারণা হয় যে, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এমন আশঙ্কা তাঁর ছিলই। ফলে এই প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘ উত্তর দেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, এর আগেও বহুবার নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গণতন্ত্রে সেটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত।
রাজীব কুমারকে এই প্রশ্নও করা হয় যে, প্রধানমন্ত্রীর গুজরাত সফরের জন্যই কি ভোটের দিন ঘোষণায় দেরি হয়েছে? হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে একই দিনে ভোট কেন ঘোষণা করা হল না? জবাবে তিনি বলেন, এর জবাব আমি আগেও দিয়েছি। বিধানসভার মেয়াদ শেষ হতে অনেক দেরি হয়েছে। কমিশন কোনও দেরি করেনি।