দেশের সময়,গোবরডাঙা : পায়ে পায়ে ১৪০। পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা, স্টিম ইঞ্জিন থেকে ডিজেল ট্রেন অগণিত ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও বিরাম নেই, সকাল থেকে রাত সদা ব্যস্ততায় কাটে তার। তিনি আর কেউ নন, এক ঐতিহ্যবাহী রেলস্টেশন গোবরডাঙা । শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায় উত্তর২৪পরগনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রেলস্টেশনের জন্মদিনে পালিত হল অভিনবত্বের মধ্য দিয়ে।
মঙ্গলবার ঘড়ির কাঁটা ১২টার ঘর পেরোতেই প্ল্যাটফর্মে মোমবাতি জ্বেলে কেক কেটে গোবরডাঙা স্টেশনের জন্মদিন পালন করলেন একঝাঁক তরুণ-তরুণী।
রেলস্টেশনের যাত্রা শুরুর ১৪০ তম বর্ষপূর্তিতে রাত বারোটায় কেক কেটে ধুমধাম করে পালিত হল জন্মদিন।
গোবরডাঙা রেলস্টেশনের ১৪০ তম জন্মদিন পালনের উদ্যোগ যদিও রেল কর্তৃপক্ষের নয়, আয়োজন করলেন সংস্কৃতির পীঠস্থান গোবরডাঙা শহরেরই নবীন প্রজন্ম। স্টেশনের বার্থ ডে পার্টিতে যোগ দেন রেল যাত্রীরাও। রেলের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, প্রায় ১৪০ বছর আগে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে নটায় প্রথম শিয়ালদহ থেকে গোবরডাঙায় এসেছিল ট্রেন। সেই যাত্রা শুরুর দিনের কথা মাথায় রেখেই, দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রাতেই গোবরডাঙা স্টেশনে জন্মদিন পালন করা হল।
এলাকার বহু মানুষ এদিন স্টেশনে হাজির হয়ে টিকিট কাউন্টার সহ স্টেশনটিকে ১৪০টি প্রদীপ ও বেলুন দিয়ে সাজান। এছাড়াও গোবরডাঙা বাসীদের তরফ থেকে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দিনটিকে পালন করা হল । গোবরডাঙা স্টেশনের ১৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মারক গ্রন্থ প্রকাশের পাশাপাশি আলোচনা সভা, নাচ, গান, বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। যাত্রীরা তাদের সঙ্গে রাখা গোবরডাঙা রেল স্টেশনের বেশ কিছু পুরনো ছবি সকলের সামনে তুলে ধরেন, নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমে রেল যাত্রার নানা অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন।
স্টেশনের জন্মদিনে এত আয়োজন দেখে স্টেশন মাস্টারও যেন অভিভূত হয়ে পড়েন। তিনি জানান, তাঁর চাকরি জীবনে স্টেশনের জন্মদিন পালন প্রথম দেখলেন ।সত্যিই শুনলে অনেকেই অবাক হবে,স্টেশনের আবার জন্মদিন। কিন্তু এ শুধু স্টেশনের বর্ষপূর্তি। এটি আসলে এক জনপদের উন্নয়নের পথে পা বাড়ানোর দিন। রেলপথে যোগাযোগ মানে জীবিকা ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই হাতের মুঠোয়। শিয়ালদহ- বনগাঁ শাখার প্রাচীন স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম এই গোবরডাঙা স্টেশন , তাই সেই স্টেশন এই প্রজন্মে সকলে মনে রাখবে তার জন্যই এত আয়োজন বলে জানান তরুণ-তরুণীরা ৷ তথ্যও ছবি-মৈনাক ঘোষ৷