দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজস্থানের এক স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক মীরা কুন্তল প্রেমে পড়ে যান স্কুলেরই পড়ুয়া কল্পনা ফৌজদারের। জানা গেছে, স্কুলে শারীরশিক্ষার ক্লাসেই প্রথম আলাপ দু’জনের। যা গড়ায় প্রেমে। এরপরই লিঙ্গ পরিবর্তন করার চিন্তা করেন মীরা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। মীরা লিঙ্গ পরিবর্তন করে হয়েছেন আরভ। তাঁর কথায়, ‘ভালবাসার জন্যই লিঙ্গ বদল করলাম।’
স্কুলের ক্লাসেই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম হয়েছিল। তার পরে তাঁরা বিয়েও করলেন। কিন্তু তা করতে গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে হল ‘প্রেমিক’কে। কারণ আদতে তিনি ছিলেন মহিলা শিক্ষিকা। কিন্তু ছাত্রীর প্রতি তাঁর ভালবাসা এতই তীব্র, সে জন্য নারী থেকে পুরুষে পরিণত হলেন তিনি ৷
রাজস্থানের ভরতপুরে একটি স্কুলের এই ঘটনার কথা শুনে চমকে উঠছেন সকলে। এমনও হয়! শিক্ষিকা মীরা থেকে পুরুষ হয়ে ওঠা আরভ কুন্তল অবশ্য ভালবাসার ছাত্রীকে বিয়ে করার পরে বলছেন, ‘ভালবাসায় সবই সুন্দর!’
রবিবারই বিয়ে হল মীরা তথা আরভ কুন্তল এবং কল্পনা ফৌজদারের। মীরার সঙ্গে কল্পনার দেখা এবং আলাপ স্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশন ক্লাসে। কল্পনা রাজ্যস্তরের কবাডি খেলোয়াড়। আগামী মাসে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে দুবাই যাওয়ার কথা তাঁর। কল্পনাকে ট্রেনিং দিতেন মীরা। সেই সময় থেকেই কল্পনার প্রতি তীব্র টান অনুভব করতে থাকেন তিনি।
মীরা জানিয়েছেন, তাঁর মধ্যে পুরুষালি সত্তা আগে থেকেই ছিল। তিনি মেয়ে হয়ে জন্মালেও, মন থেকে পুরুষদের মতোই ছিলেন। শরীরেও তেমনটাই চাইতেন। তাঁর কথায়, ‘আমি সবসময় নিজেকে একটা ছেলে ভাবতাম। ইচ্ছাও ছিল লিঙ্গ পরিবর্তন করার। কিন্তু কল্পনাকে ভালবাসার পরে সে ইচ্ছা আরও জোরদার হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আমি প্রথম অস্ত্রোপচারটি করাই।’ এর পরে আরও কয়েকটি অস্ত্রোপচারের পরে পুরোপুরি ছেলে হয়ে ওঠেন তিনি। নাম পরিবর্তন করে আরভ কুন্তল হয়ে ওঠেন তিনি।
কল্পনা জানিয়েছেন, তিনিও বহুদিন ধরেই মীরা তথা আরভের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। এমনকি মীরা যদি অস্ত্রোপচার করে পুরুষ নাও হতেন, তাহলেও তিনি মীরাকেই বিয়ে করতেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই ওকে ভালবাসি। ও লিঙ্গ পরিবর্তন না করলেও ওকেই বিয়ে করতাম।’
রবিবার দুই পরিবারের মতেই বিয়ে হয় আরভ ও কল্পনার। তথ্য বলছে, এই দেশে এখনও পর্যন্ত এমন বিয়ের দৃষ্টান্ত বড় একটা নেই। সমকামী বিয়ে বা রূপান্তরকামীদের বিয়ের ঘটনা ইদানীং শোনা গেলেও, লিঙ্গ বদল করে ছাত্রীকে বিয়ে করার ঘটনা বিরল বলা যায়।