
চুরির অপবাদ মেনে নিতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিল পাঁশকুড়ার ১৩ বছরের কিশোর। এর পর থেকেই তার বিরুদ্ধে চিপসের প্যাকেট ‘চুরি’ করার অভিযোগ তোলা দোকানের মালিক তথা সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিতের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছিল এলাকাবাসী। অনেকেই তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি করছিলেন। রবিবার এই ঘটনায় পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন মৃত ছাত্রের মা।

অন্যদিকে, এ দিন ওই দোকানের মালিকের শাস্তির দাবিতে পাঁশকুড়া থানা ঘেরাও করে বিজেপি। চিপসের প্যাকেট গলায় ঝুলিয়ে দেখানো হয় প্রতীকী প্রতিবাদও। জানা গিয়েছে, কিশোরের মায়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।

উল্লেখ্য, গত রবিবার স্থানীয় একটি মিষ্টির দোকানে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। সেই সময়ে দোকানে ব্যবসায়ী ছিলেন না। বার দুয়েক ওই নাবালক তাঁকে ডাকাডাকিও করেন।
ওই দোকানের সামনে ঝুলছিল কিছু চিপসের প্যাকেট। তার মধ্যে কয়েকটি প্যাকেট নীচে পড়ে যায়। নাবালক রাস্তায় চিপসের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখে তা তুলে নেয়।

এর পর দোকানদার নাবালককে ধাওয়া করে এবং চিপস চুরির অপবাদ দেয় বলে অভিযোগ। নাবালকের মা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে জানিয়েছিল, ওই চিপস সে কুড়িয়ে পেয়েছে। এমনকী, দোকানদারকে সেই চিপসের জন্য টাকাও দিয়ে দেয় সে। কিন্তু তার পরেও তাঁর ছেলেকে দোকানে নিয়ে যায় ওই ব্যবসায়ী এবং কানধরে ওঠবস করায় বলে অভিযোগ।

ওই নাবালকের মা প্রাথমিক ভাবে গোটা ঘটনাটি শুনে নাবালককে ঘটনাস্থল থেকে ফিরিয়ে আনে। এই চোর অপবাদ সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে চাষের জন্য রাখা কীটনাশক খেয়ে নেয় নাবালক। তাকে তড়িঘড়ি তমলুক মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে গেলেও গত বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে তার মৃত্যু হয়। ওই কিশোর ডায়েরিতে লিখে যায়, ‘মা আমি চুরি করিনি’।

ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার
তথা ব্যবসায়ীর উপর ক্ষোভ বাড়ছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরে কি তার বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে? এখন তাই দেখার।