বাকিবুর রহমান পরিচিত ছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ হিসাবে। আর মুকুল ও বিদেশ হলেন বাকিবুরের মামাতো ভাই। এই বিদেশ আবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতিও। কীভাবে খাদ্য দফতরের নথি বিদেশের চালকলে? তাহলে কি রেশন দুর্নীতির আখড়া ছিল বিদেশের রাইস মিল? উঠছে প্রশ্ন।
দেশের সময় , দেগঙ্গা : মঙ্গলবার থেকেই রেশন দুর্নীতির তদন্তে সক্রিয় হয় ইডি। শুধু মাত্র বারিক বিশ্বাসের বাড়িতেই নয়, দেগঙ্গার চালকল ব্যবসায়ী আলিফ নূর মুকুল ও আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশের বাড়িতেও টানা ম্যারাথন তল্লাশি। সূত্রের খবর, বিদেশ ও মুকুলের বাড়ি লাগোয়া চালকল থেকে উদ্ধার রাজ্য সরকারের খাদ্য দফতরের সিল যুক্ত নথি। উদ্ধার বাকিবুর রহমানের চালকলের নথিও।
প্রায় ২১ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযানের পর মঙ্গলবার রাত ১টার পর দেগঙ্গায় বাকিবুর রহমানের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ইডির অফিসারেরা।
সূত্রের খবর, দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তল্লাশির পর বাকিবুরের আত্মীয়র বাড়ি থেকে দু’টি মোবাইল তদন্তের কারণে নিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়া বেশ কিছু নথিপত্রও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছে ইডির তদন্তকারী দল।
রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে মঙ্গলবার ভোর থেকে অভিযানে নেমেছিল ইডি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক চালকলে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা।
তালিকায় ছিল দেগঙ্গায় রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার বাকিবুর রহমানের আত্মীয় মুকুল রহমানের বাড়ি ও চালকলও। তিনি আবার তৃণমূলের স্থানীয় ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমানের দাদা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে মুকুলের চালকলে তল্লাশি চালায় ইডির দল। রাত ১০টা নাগাদ চালকল থেকে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা, কিন্তু মুকুলের বাড়িতে তখনও চলছিল জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি পর্ব। শেষে গভীর রাত ১টার পরে বাড়ি থেকে দু’টি মোবাইল ও কিছু নথিপত্র নিয়ে বাকিবুরের আত্মীয়ের বাড়ি ছাড়ে ইডি।
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডি ইতিপূর্বেই গ্রেফতার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। প্রাক্তন মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুরকেও গ্রেফতার হয়েছেন ইডির হাতে। ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুরের ব্যবসায়িক কারবার অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হত দেগঙ্গা থেকে। এ বার বাকিবুরের আত্মীয় বাড়িতে কিসের সন্ধানে হানা কেন্দ্রীয় সংস্থার?
মুকুলের কোনও বক্তব্য এখনও না পাওয়া গেলেও, তৃণমূল ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, ইডির অফিসারদের সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়েছে। তদন্তকারীরা যা নথিপত্র চেয়েছেন, তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “সর্ব স্তরে সহযোগিতা করা হয়েছে। আগামী দিনেও করা হবে। তবে ইডি-সিবিআইয়ের হানা আজকাল সাধারণ বিষয় হয়ে গিয়েছে।” আনিসুর আরও জানিয়েছেন, তাঁর এবং মুকুলের মোবাইল নিয়ে গিয়েছে ইডির তদন্তকারী দল।