দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দু’বছর পরে রমরমিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরল ইডেনে।
আবার সেই উন্মাদনার সাক্ষী কলকাতা। গ্যালারিতে মোবাইল জোনাকি, মেক্সিকান ওয়েভ। ইডেন ফিরল ইডেনে। একই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন যুগের দুর্দান্ত শুরু। ইডেনেই এল সেই সন্ধিক্ষণ। রবিবার ক্রিকেটের নন্দনকাননে সিরিজের তৃতীয় টি-২০ ম্যাচ জিতে কিউয়ি হোয়াইটওয়াশ টিম ইন্ডিয়ার। ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১১১ রানে অল আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। একমাত্র গাপ্তিল ছাড়া ভারতীয় বোলারের সামনে কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। ৭৩ রানে বিশাল জয় টিম ইন্ডিয়ার।
সেই সঙ্গে রবিবার ইডেনে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে একটি রেকর্ড করে ফেলল ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরে এবং বাইরে একটিও ম্যাচ না হেরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার রেকর্ড করল ভারত। বিশ্বে ভারতই একমাত্র দল, যারা এই কীর্তি গড়ল।
২০২০ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে ভারত পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ফলে জেতে। দু’টি ম্যাচ চাই হয়। এরপর এ বার নিজেদের দেশে ভারত নিউজিল্যান্ডকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ফলে হারাল।
বিরাট কোহলীর নেতৃত্বে ২০২০ সালের সিরিজে ভারত অকল্যান্ডে প্রথম ম্যাচ জেতে ৬ উইকেটে। অকল্যান্ডেই পরের ম্যাচে কোহলীরা জেতেন ৭ উইকেটে। হ্যামিলটনে তৃতীয় ম্যাচ টাই হয়ে যায়। ওয়েলিংটনে চতুর্থ ম্যাচও টাই হয়ে যায়। মাউন্ট মাউনগানুইয়ে কোহলী খেলেননি। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে নামে ভারত। ৭ রানে জেতেন রোহিতরা।
নতুন অধিনায়ক রোহিতের নেতৃত্বে জয়পুরে প্রথম ম্যাচে ভারত জেতে ৫ উইকেটে। রাঁচীতে দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের জয় আসে ৭ উইকেটে। কলকাতায় রবিবার শেষ ম্যাচে রোহিতরা জেতেন ৭৩ রানে।
ভারতীয় ক্রিকেটে দাপুটে শুরু রাহুল দ্রাবিড়-রোহিত শর্মা জুটির। ইডেনে আরও একটা অর্ধশতরান রোহিত শর্মার। টি-২০ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি অর্ধশতরানের রেকর্ড গড়লেন হিটম্যান। মাত্র ৯ রানে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা অক্ষর প্যাটেল। জৈব বলয়ের জন্য এদিন চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেননি বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। রোহিত নিজেই ট্রফি নিয়ে দলের হাতে তুলে দেন।
আরও একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়াযাক রবিবারের ম্যাচ : জানুন কীভাবে এদিন টসে জিতে সবাইকে অবাক করে ব্যাটিং নেন রোহিত- টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে ট্রেন্ড বলছে, পরে ব্যাট করা দলই অধিকাংশ ম্যাচ জিতেছে। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টসে জিতে পরে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। কিন্তু ইডেনের ইতিহাস এবং চরিত্রের কথা মাথায় রেখে এদিন ব্যাটিং নেন। কোহলির উত্তরসূরির সিদ্ধান্ত একশো শতাংশ সঠিক। এদিন দলে দুটো পরিবর্তন করা হয়েছিল।
কেএল রাহুল এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পরিবর্তে সুযোগ পান ঈশান কিষান এবং যুজবেন্দ্র চাহাল। আরও একটা দুর্ধর্ষ শুরু ভারতের।
মাত্র ৩১ বলে প্রথম উইকেটে ৫০ রানের পার্টনারশিপ রোহিত এবং ঈশান কিষাণের মধ্যে। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান তোলে ভারত। এরপরই স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে কাহিল।
৬.২ ওভারে ৬৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। ২৯ রানে আউট হন ঈশান কিষান। মাত্র ১৪ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। পরপর ফিরে যান সূর্যকুমার (০), ঋষভ পন্থ (৪)। তিন উইকেটই নেন স্যান্টনার। উইকেটের অন্য প্রান্তে নিজের পছন্দের মাঠে স্বমহিমায় ছিলেন রোহিত। মাত্র ২৭ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন। তারপর অবশ্য বেশি রান যোগ করতে পারেননি।
৫৬ রানে সোধির বলে আউট হন। একটা সময় মনে হয়েছিল হয়ত টেনেটুনে দেড়শো রানের গণ্ডি পেরোবে ভারত। কিন্তু শ্রেয়াস আইয়ার (২৫) এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ার (২০) গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন। শেষদিকে হর্ষল প্যাটেল (১৮) এবং দীপক চাহারের (২১) ক্যামিও ৭ উইকেট হারিয়ে দলকে ১৮৪ রানে পৌঁছে দেয়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় নিউজিল্যান্ড। অক্ষর প্যাটেলের দাপটে মাত্র ৩o রানের মধ্যে ফিরে যান মিচেল (৫), চ্যাপম্যান (০) এবং ফিলিপস (০)। এরপর আর কিউয়িদের পক্ষে ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। একা কুম্ভ রক্ষা করেন মার্টিন গাপ্তিল। ৩৬ বলে ৫১ রান করে আউট হন। গাপ্তিল এবং সেইফার্ট ছাড়া কেউ দু’অক্ষরের রানে পৌঁছতে পারেনি। মাত্র ১৭.২ ওভারে ১১১ রানে শেষ হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তিন উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল। দুই উইকেট হর্ষলের।