

বিধানসভা নির্বাচন সামনে, তার মধ্যেই সাত সকালে কলকাতার নানা জায়গায় ইডির তল্লাশি। সল্টলেক থেকে নাগেরবাজার, কাঁকুড়গাছি মিলিয়ে ৬ জায়গায় চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তথ্যপ্রমাণ আগেই হাতে এসেছিল, সেই নিয়ে জোরকদমে চলছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তল্লাশি। স্ক্যানারে রয়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও।

জানা গিয়েছে, সকাল ৬টা নাগাদ নানা জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। সাড়ে ৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। সল্টলেকের বি সি ব্লকে ৮৮ নম্বর দমকলমন্ত্রী এবং বিধায়ক সুজিত বসুর অফিসে রয়েছেন তাঁরা। এর আগে মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি হলেও এই অফিসের কথা জানত না ইডি। তাই আজ এখানে তল্লাশি।

গত বছরে পুর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনার তদন্তে নেমে সুজিত বসুর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। সেই সময়ে সুজিত দাবি করেছিলেন, তিনি যদি চাকরির জন্য কারও কাছে এক টাকা নিয়ে থাকেন বলে প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে তিনি পদত্যাগ করবেন। আর তা নিয়ে বিস্তর সরগরমও হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। বছর ঘুরলেই বাংলায় নির্বাচন। অতীতে একাধিকবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এজেন্সি ব্যবহার করে রাজনীতি করার অভিযোগ করেছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। যদিও সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। ভোটমুখী বঙ্গে সুজিতের অফিসে ইডি তল্লাশি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

পাশাপাশি দক্ষিণ দমদমের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের অফিসেও চলছে তল্লাশি। এই মামলায় কলকাতা-সহ রাজ্যের সাত জায়গাতে হানা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যে নাগেরবাজার, কাঁকুড়গাছিও রয়েছে।

নাগেরবাজারে এক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দীপক দে এবং কাঁকুড়গাছিতে এক অডিটর সঞ্জয় পোদ্দারের বাড়িতেও গিয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে যে সব কোম্পানির নাম উঠে এসেছে, তাদের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই সব ব্যক্তির নামও। সেই সূত্রেই তাঁরাও এখন ইডির আতশ কাচের তলায়।

দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর সল্টলেকের অফিসে যখন ইডি আধিকারিকরা রয়েছেন, নিচে গেটের কাছে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনির জওয়ানরা।
কিন্তু পুজোর পর পরই আবার সক্রিয় হয়ে উঠল কেন কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ইডির জবাব, এর আগে পুর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নানা ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ তাঁদের হাতে এসেছে। ফলে, সেই সংক্রান্ত কিছু ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন, তাই এই তল্লাশি।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি, মন্ত্রী সুজিত বসুর একাধিক বাড়িতে ১৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডির আধিকারিকরা। এইবার তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও চলছে এখনও টানা তল্লাশি।

অন্যদিকে, ১২০০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ খেলাপি মামলায় সক্রিয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সংশ্লিষ্ট মামলায় একটি গয়নার সংস্থার ম্যানেজার, কর্মী-সহ হিসাবরক্ষক (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট)-এর বাড়িতে ইডি-র হানা।

পাশাপাশি সাতটি জায়গাতেও চলছে তল্লাশি। গিরিশ পার্ক থানার অন্তর্গত একটি বাড়িতে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে শরৎ বসু রোড়ে এবং নিউ আলিপুরের একটি বাড়িতে ইডি-র দল রয়েছে। এই মামলায় তদন্তকারীদের নজরে কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীও। জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে তাঁর বাড়িতেও গিয়েছেন ইডি-র আধিকারিকরা।