দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাজারে নগদের জোগান কমিয়ে কালো টাকা বন্ধের জন্য পাঁচ বছর আগে নোটবন্দি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রধানমন্ত্রী তখন জানিয়েছিলেন, নোটবন্দির ফলে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহ বাড়বে। এ বার সেই লক্ষ্যে আরও এক কদম এগোতে চাইছে দিল্লির সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার একটি কনসেপ্ট নোট রিলিজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। তাতে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট ব্যবহারের জন্য খুব শিগগির ই-রুপি তথা ডিজিটাল টাকার প্রচলন পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে শুরু করতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৷
ডিজিটাল টাকা বা রুপি হল নগদ টাকারই ডিজিটাল ফর্ম। যার মাধ্যমে কনট্যাক্টলেস ট্রানজ্যাকশন বা সংযোগহীন লেনদেন করা যাবে। চলতি আর্থিক বছরের সাধারণ বাজেট পেশ করার সময়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খুব তাড়াতাড়ি ডিজিটাল কারেন্সি বা টাকা চালু করতে চলেছে। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি তথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডিজিটাল কারেন্সি ২০২৩ সালে চালু হয়ে যাবে।
না, ডিজিটাল কারেন্সি বা টাকার উপর কোনও সুদ পাওয়া যাবে না। এই টাকা হল পকেটে বা মানি ব্যাগে থাকা নগদ টাকার মতোই। শুধু নোট বা কয়েনে না থেকে তা ডিজিটাল ফর্মে থাকবে। অর্থাৎ এই টাকা ব্যাঙ্কে জমা আমানতের মতো নয়। তাই এর উপর সুদ পাওয়া যাবে না।
শুক্রবার মুম্বইতে যে কনসেপ্ট নোট প্রকাশ করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, তাতে বলা হয়েছে যে বেশ কিছু দিন ধরেই ডিজিটাল টাকার প্রচলনের ব্যাপারে সবরকম দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মনে করছে, ধাপে ধাপে এর প্রচলন শুরু করা যেতে পারে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আরও জানিয়েছে যে এমন ভাবে এই ই-রুপি বাজারে আনার চেষ্টা হবে যাতে বর্তমান অর্থ ব্যবস্থায় কোনও বিভ্রান্তি বা সমস্যা তৈরি না হয়। অনেকের মতে, নোটবন্দির ক্ষেত্রে যে হঠকারী পদক্ষেপ করা হয়েছিল তার অভিজ্ঞতা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঝুলিতে রয়েছে। মানুষের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না। সেই কারণেই সম্ভবত ডিজিটাল টাকা বাজারে আনার ক্ষেত্রে সবরকম পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
অর্থমন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই দেশের একাংশ মানুষ ডিজিটাল রুপি সম্পর্কে অবগত। তাঁরা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে অনেকেই এই ব্যাপারে সচেতন। আর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কথায়, “দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের দায়িত্ব হল এমন ভাবে ডিজিটাল কারেন্সি বাজারে ছাড়া যাতে সাধারণ মানুষের অর্থ কোনও ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে। তা যথাসম্ভব যেন মসৃণ হয়।”
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আরও জানিয়েছে, তারা খুচরো ও পাইকারি দু’ধরনের ডিজিটাল টাকার কথাই বিবেচনা করছে। পাইকারি ব্যবস্থায় ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে লেনদেনের নিষ্পত্তি অনেক দ্রুত ও সুচারুভাবে করা সম্ভব। আর খুচরো ডিজিটাল টাকার মাধ্যমে মানুষ তাদের দৈনন্দিন কেনাকাটা বা খরচ সহজেই করতে পারবে।