বনগাঁ : দুর্গাপুজোর জাঁকজমকে খ্যাতি রয়েছে বনগাঁর। সীমান্ত শহরে শেষবার দুর্গাপুজোর কার্নিভ্যাল হয়েছিল চার বছর আগে। এ বার ফের কার্নিভ্যালে মাতল বনগাঁ শহরের মানুষ। দেখুন ভিডিও
কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভ্যাল শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডের সেই কার্নিভ্যাল ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে। কলকাতার পাশাপাশি এখন জেলাতেও কার্নিভ্যাল হচ্ছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। বনগাঁ পুলিশ জেলা ও বনগাঁ পুরসভার সহযোগিতায় সোমবার সন্ধ্যায় কার্নিভাল শুরু হয় ।
বনগাঁ শহরে বড় বাজেটের পুজোর সংখ্যা ২১টি। মণ্ডপ, মাতৃপ্রতিমা, আলোকসজ্জায় একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা প্রতি বছরই থাকে। এ বার দুর্গাপুজো কার্নিভ্যাল ফেরায় সেই প্রতিযোগিতা আরও বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন পুজো কমিটির সদস্যরা।
বনগাঁর বাসিন্দারাও বেশ খুশি। কারণ অন্যান্য পুর এলাকায় কার্নিভ্যাল হলেও সেই আমেজ থেকে চার বছর বঞ্চিতই ছিলেন এখানকার বাসিন্দারা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারের কার্নিভ্যালে শহরের মোট ১০ টি পুজোকমিটি অংশ নিয়েছে। শোভাযাত্রা শুরু হয় বনগাঁর শক্তিগড় কালীবাড়ি থেকে। চাকদা রোড ধরে কার্নিভ্যাল এগিয়ে যায় ত্রিকোণ পার্কের দিকে। কার্নিভ্যালে প্রথম স্থানাধিকারী পুজো কমিটিকে দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীকে যথাক্রমে ৪০ এবং ৩০ হাজার টাকার নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বনগাঁ পুরসভার তরফ থেকে। বাকিদের সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
এদিন শোভাযাত্রার শেষে বনগাঁ থানার ঘাটে ইছামতীতে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমার। বিসর্জনের জন্য যাবতীয় খুঁটিনাটির ব্যবস্থা আগেই করেছে পুরসভা। ইছামতীর জল যাতে দূষিত না হয়, সে জন্য হাইড্রা মেশিন দিয়ে প্রতিমা জলে ডুবিয়েই তুলে ফেলা হয়।
বনগাঁ জেলা পুলিশ এবং বনগাঁ পুরসভার যৌথ উদ্যোগে এই কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়। এই কার্নিভালে যে দশটি পুজো কমিটি অংশ নিয়েছে তার মধ্যে বনগাঁ শহরের প্রতাপগড় স্পোর্টিং ক্লাব, আনন্দময়ী মাতৃমন্দির, পূর্বাঞ্চল আদিবাসী, ইউনাইটেড স্পোটিং ক্লাব, পশ্চিমপাড়া অ্যাথলেটিক ক্লাব, রেটপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব এবং বনগাঁ থানা আবাসনের পুজো।
অন্যদিকে, গোপালনগর থানার পাল্লা, বাগদার সিন্দ্রানী এবং গাইঘাটার শিমুলপুর এলাকার পুজো কমিটিগুলিও এদিন কার্নিভালে অংশ নেয়। কার্নিভালে বিভিন্ন ট্যাবলো দিয়ে সাজিয়ে অংশ নেওয়া পুজো কমিটিগুলি এবং তাদের উপস্থাপনার উপর পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রথম স্থান অধিকার করেছে আনন্দময়ী মাতৃমন্দির, দ্বিতীয় স্থানে প্রতাপগড় স্পোর্টিং ক্লাব এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড স্পোটিং ক্লাব ।
এদিন কার্নিভালের অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ মহকুমাশাসক উর্মী দে বিশ্বাস , বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপার দীনেশ কুমার , পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ সহ অন্যান্য কাউন্সিলর গণ । কার্নিভাল দেখতে ত্রিকোণ পার্কে দর্শকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো ।
শনিবার দশমী থেকেই বিসর্জনের বাজনা বাজতেই দুর্গাপুজো কার্নিভালের দিন গোনা শুরু হয়েছিল । সোমবার উমাকে বিদায় জানাতে সুসজ্জিত শোভাযাত্রায় নাচে-গানে বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে বনগাঁর এই কার্নিভালে । এবার প্রতিমা নিরঞ্জনের বিষাদ দিয়ে এবছরের মতো দুর্গা পুজো শেষ । আসছে বছর আবার হবে ধ্বনি দিয়ে দিন গোনা শুরু ।