দেশের সময়: চারদিকে যখন ভাঙার খেলা চলছে, তখন ভাঙা পরিবার জুড়ে দিলেন মা দুর্গা। বহু বছর পর ফের পুজো হল এবার। আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই পাঁচদিন হই হই করে কাটালেন পরিবারের সদস্যরা। যাঁদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কোনও যোগাযোগ ছিল না, সেইসব আত্মীয়রাও এসেছিলেন পুজোয়। একসাথে পাত পেড়ে খাওয়া দাওয়া চলেছে পুজোর কটা দিন। বাড়ির পুজো হলেও শুধু একটি পরিবার নয়, এই পুজোয় শামিল হয়েছিলেন এলাকার মানুষজন। তাঁরাও এই পুজোতে চুটিয়ে আনন্দ করেছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অবিভক্ত বাংলায় এই পুজো হত যশোরে। এরপর পরিবারের বংশধর নির্মলচন্দ্র দাস ও তাঁর স্ত্রী শান্তিলতা দাস যখন টাকিতে এসে বসবাস শুরু করলেন, তখন নানা কারণে পুজো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শান্তিলতা দেবীর ইচ্ছা থাকলেও নতুন করে আর শুরু করা যায়নি পুজো। তার পর ইছামতী নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। যৌথ পরিবার ভেঙে টুকরো হয়েছে। বাড়ির ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে সবাই বাইরে।
ফলে চাইলেও বাড়িতে আর দুর্গাপুজো শুরু করা যায়নি। ফলে পুজো এলে যেন মনের কোণে কোথাও একটা খারাপ লাগা থেকেই যেত। সেই মন খারাপ এবছর ঘুচিয়ে দিয়েছেন নাতি-নাতনিরা। নির্মলচন্দ্র দাস পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর ছিলেন। সেকারণে টাকির উত্তরআটি পাড়ার এই বাড়িটি দারোগা বাড়ি নামে পরিচিত। সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটেছিল এই পুজোয়।
প্রতিমা মাতৃমূর্তি, একচালায়। থিমের মণ্ডপের নাম ছিল বেঙ্গল। বাংলার হস্তশিল্প তুলে ধরা হয় মণ্ডপসজ্জায়। শিল্পী মলয় দাস ও সবুদ্ধ ঘোষ। দুজনেই প্রতিষ্ঠিত ফাইন আর্টস শিল্পী। কলকাতায় এখন যে থিম পুজোর বাহার, তা আজ থেকে ৩০ বছরেরও আগে শুরু হয়েছিল মলয়বাবুর হাত ধরে। ঘটনাচক্রে মলয় দাস এই বাড়ির জামাই। তিনি বললেন, এতদিন বন্ধ থাকার পর বাড়িতে পুজো শুরু হল, বড়দের কাছে তা দারুণ নস্টালজিক। ছোটদের কাছে খুবই আনন্দের। মণ্ডপসজ্জায় ছিল ধামা, কুলো, পাখা, আমপাতা, মাদুর আরও কত কী!