ধ্রুব হালদার ,কলকাতা: ১ অক্টোবর ষষ্ঠী। কিন্তু আজ ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকেই পুজো শুরু হয়ে গেল বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর দুটোর আগেই জোড়াসাঁকো থেকে মিছিল শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জোঁড়াসাঁকো থেকে দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় তখন মাইকে গান বাজছে ‘টাক ডুমা ডুম, টাক ডুমা ডুম, পুজো পুজো আসছে আনন্দেরই ধুম’। সৌজন্যে গায়ক তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মন্ত্রিসভার তথ্য মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। সেই গানের তালে তালে মুখ্যমন্ত্রী মিছিলে পা বাড়াতেই তাঁর পাশে দেখা গেল রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে।
কলকাতার দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের শিরোপা দিয়েছে ইউনেস্কো। তাদের ধন্যবাদ জানাতেই এই মিছিলের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। এদিনের মিছিলের কর্মসূচি কয়েক মাস আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মমতা। জোড়াসাঁকো থেকে মিছিল যাবে রেড রোড পর্যন্ত।
শুধু দ্বিবেদী নন, বুধবারই নবান্নের অভ্যন্তরীণ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল কলকাতার এই ঐতিহ্যের উদযাপনে সামিল হতে হবে সচিব ও তদুর্ধ্ব পদ মর্যাদার সমস্ত আইএএস অফিসারকে। সেই সঙ্গে হাজির থাকতে হবে কলকাতা পুলিশের আইপিএস অফিসারদেরও। বস্তুত জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে সবাইকে বাধ্যতামূলক ভাবেই উপস্থিত থাকতে হবে।
বলাবাহুল্য এই নির্দেশ অমান্য করার প্রশ্ন নেই। পঞ্চায়েত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য দফতর সহ সমস্ত দফতরের সচিব, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এদিনের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। তাঁরা কেউ কেউ এই শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক ক্যাপও মাথায় দিয়েছেন। বাংলায় এই ঘটনা বিরল শুধু নয় বলা যেতে পারে এই প্রথম এহেন ঘটনা ঘটল। এই শোভাযাত্রা কোনও ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নয়। এর আয়োজন করেছে সরকারই। সুতরাং নিয়ম অনুযায়ী এতে সরকারি আমলা বা পুলিশ কর্তাদের উপস্থিত থাকায় বাধা নেই।
তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, আমলা ও আইপিএস কর্তাদের মিছিলে হাঁটতে বলাও মুখ্যমন্ত্রীরই ভাবনা হতে পারে। কারণ, বাংলায় থাকা অবাঙালি আমলা বা পুলিশ কর্তারা একে তো বাঙালির উৎসব ও মেজাজের সঙ্গে আরও সম্পৃক্ত হতে পারবেন। তা ছাড়া গত কয়েক মাস ধরে একটি নেতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে রাজ্যে। আমলা ও পুলিশ মহলেও উৎসাহ-আনন্দে ভাঁটা পড়েছে। ফলে শোভাযাত্রায় সামিল করে তাঁদেরও কিছুটা উৎসাহ হয়তো দিতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মূলত কলকাতা, সল্টলেক, যাদবপুর ও বেহালার ক্লাবগুলো এদিন কেন্দ্রীয় মিছিলে অংশ নিয়েছে। সুসজ্জিত সে মিছিল দেখার মতো। তা ছাড়া প্রতিটি জেলা সদরেই এদিন পৃথক পৃথক মিছিল হওয়ার কথা। কোভিডের কারণে দু’বছর ভাল করে পুজোয় মানুষ বেরোতে পারেননি। এবছর এক মাস আগেই পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল!