দেশের সময়: সিংহবাহিনী। মহিষাসুরমর্দিনী। যে নামেই ডাকি না কেন, তিনি তো মা। আবার তিনিই আমাদের ঘরের মেয়ে। উমা। ফলে দশভুজার কোনও বাঁধাধরা অবয়ব হতে পারে না। মাকে কেমনভাবে সাজাবে, তা তো মেয়েই জানে। আবার মেয়েকে তাঁর মনের মতো করে সাজাতে মায়ের চেয়ে ভাল আর কে পারে। তাই তো শিল্পী মোহিনী বিশ্বাস রং তুলি ধরেছেন। মনের মাধুরী মিশিয়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছেন মাকে। ছবিতেই যেন প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে জগৎজননীর।
মোহিনীর আঁকা দুর্গা শুধু মোহিনীর নয়। তিনি বিশ্বজননী। মোহিনীর আঁকা দুর্গাই দেবীপক্ষে উপহার দেওয়া হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বাংলার যুব সমাজের আইকন। তারুণ্যের প্রতীক। সবুজ প্রাণে লড়াইয়ের শক্তি জোগাতেই তাঁকে উপহার দেওয়া হচ্ছে এই ছবি।
শিল্পীর ভাবনাকে বাস্তবায়িত করছেন বনগাঁর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহা। তাঁর কথায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের যুব সমাজের উন্মাদনা। এগিয়ে যাওয়ার শক্তি। ভবিষ্যৎ। মা দুর্গা মাতৃশক্তি। যিনি ছবিটি এঁকেছেন তিনিও মাতৃশক্তি। তাঁর আঁকা ছবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে এটাই বোঝাতে চাইছি, আপনার সঙ্গে মায়ের শক্তি, আশীর্বাদ আছে। আপনি নির্ভয়ে এগিয়ে চলুন। অশুভ শক্তিকে পরাভূত করুন। আমরা আপনার সঙ্গে আছি।
বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। বাংলার গণ্ডী ছাড়িয়ে মা দুর্গার আবাহনে মেতেছে গোটা বিশ্ব। আর এই বঙ্গে তো দুর্গাপুজো ঘিরে বরাবরের আবেগকে উস্কে দিয়েছে হেরিটেজ স্বীকৃতি। বঙ্গবাসী অধীর মণ্ডপমুখী হওয়ার অপেক্ষায়। এ হেন উদ্যোগের জন্য দেশের সময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি শিল্পী। বলেছেন, বনগাঁ পুণ্যভূমি। এই জনপদে বিশ্ববরেণ্য বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্রের পদধূলি মিশে আছে। শিল্প, সংস্কৃতির উৎকর্ষ কেন্দ্র ইছামতী পাড়ের এই শহর থেকে যে এমন সম্মান পাব, ভাবিবি। খুবই রোমাঞ্চ অনুভব করছি। এত জায়গায় আমার আঁকা ছবি গিয়েছে। প্রদর্শনী হয়েছে। দাম দিয়ে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এভাবে আমার চোখে দুর্গাকে সম্মান জানানো হবে, সত্যিই ভাবতে পারিনি। এই ভালবাসা একমাত্র বনগাঁই দিতে পারে। হয়তো সেকারণেই বারবার ছুটে আসি এখানে। মিশে যেতে চাই সীমান্ত শহরের মানুষের মাঝে। বারবার হারাতে চাই এই শহরের পথে পথে।
একজন শিল্পীর আঁকা ছবির এমন স্বীকৃতিতে দারুণ খুশি বনগাঁর ভূমিপুত্র শিল্পী সিন্টু ভট্টাচার্য। বলেছেন, যিনি ছবিটি এঁকেছেন তিনি একজন মহিলা। অর্থাৎ, মা দুর্গার স্বরূপ। তিনি আমার স্টুডিওতে এসেছিলেন। তাঁর শিল্প চেতনা দেখে আমি অভিভূত। ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে কাজ করব, এনিয়ে আমাদের কথা হয়েছে।
করোনা কাটিয়ে পুজোয় মেতে উঠছে শহর বনগাঁ। শহরের শিমুলতলা মোড় এলাকার আদি মোহিনীমোহন কাঞ্জিলাল মলের উদ্যোগে পুজোয় এ বার বিশাল আয়োজন। মহালয়ার আগেই তৈরী হল সেলফি জোন৷মৈত্রী ইভেন্টের শিল্পী অমৃক সিংহ জানান টেরাকোটার উপরেই মূলত তৈরী করা হয়েছে এই সেলফি জোন৷ এখানে দেবী দুর্গাকে দেখা যাবে একটি বিশেষ আদলে ৷ শনিবার আদি মোহিনী মোহন কাঞ্জিলালের সেলফি জোনে প্রতিমার চক্ষুদান করলেন শিল্পী মোহিনী বিশ্বাস৷