দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ প্রথম আদিবাসী মহিলা এবং দ্বিতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু! প্রায় নিশ্চিতই ছিল দ্রৌপদীর জয়, এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই জয়ী ঘোষণা করা হল ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপালকে।
দ্রৌপদীর জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫,৪০,৯৯৬ ভোট। দ্রৌপদী ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন ৫,৭৭,৭৭৭টি ভোট। এর পরই দিকে দিকে এই জয়কে ঘিরে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাস শুরু হয়ে গিয়েছে। শোভাযাত্রার আয়োজন হয়েছিল আগেই। প্রথম রাউন্ডের শেষেই সাংসদদের ৭৪৮ টি ভোটের মধ্যে ৫৪০ টি ভোটে এগিয়ে যান দ্রৌপদী। বিরোধীদের মনোনীত প্রার্থী যশবন্ত সিনহা প্রথম রাউন্ডের ভোট গণনার পরে ২০৮ ভোট পেয়েছেন, বৃহস্পতিবার জানান রিটার্নিং অফিসার পিসি মোদি। তিনি আরও জানান, ১৫ জন সাংসদের ভোট অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর পরই দিকে দিকে এই জয়কে ঘিরে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের উচ্ছ্বাস শুরু হয়ে গিয়েছে। শোভাযাত্রার আয়োজন হয়েছিল আগেই।
দ্রৌপদী মুর্মু-র জয়ের খবর পেতেই উত্তর২৪পরগনার বাগদা বিধানসভা বিজেপি ৩-নম্বর মণ্ডল সিন্দ্রানী পঞ্চায়েতের সমস্ত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে নিয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে বৃহস্পতিবার বিকালে ৷ বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন , প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি পেতে চলেছে ভারত৷ সেই আনন্দে মাতোয়ারা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বাগদার সিন্দ্রানী গ্রামের সমস্ত আদিবাসী মানুষ৷ তাঁদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও নব নির্বাচিত মহিলা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে শুভেচ্ছা জানাতে ধামসা-মাদল নিয়ে উৎসবে মেতেছেন ৷
প্রথম রাউন্ডের শেষেই সাংসদদের ৭৪৮ টি ভোটের মধ্যে ৫৪০ টি ভোটে এগিয়ে যান দ্রৌপদী। বিরোধীদের মনোনীত প্রার্থী যশবন্ত সিনহা প্রথম রাউন্ডের ভোট গণনার পরে ২০৮ ভোট পেয়েছেন, বৃহস্পতিবার জানান রিটার্নিং অফিসার পিসি মোদি। তিনি আরও জানান, ১৫ জন সাংসদের ভোট অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষে ১,১৩৮ জন বিধায়কের ভোটের মধ্যে, দ্রৌপদী মুর্মু ৮০৯ টি এবং যশবন্ত সিনহা ৩২৯টি ভোট পান। জনসংখ্যা এবং বিধানসভার শক্তির উপর ভিত্তি করে এই ভোটের মূল্য ১.৪৯ লক্ষ। এর মধ্যে দ্রৌপদী মুর্মুই পেয়েছেন ১.০৫ লাখের বেশি, এবং যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ৪৪,২৭৬।
প্রায় ১১ লাখের একটি নির্বাচনী কলেজের মূল্য ৬.৭৩ লাখ। এই ৬.৭৩ লাখের মধ্যে দ্রৌপদী মুর্মু পেয়েছেন ৪.৮৩ লাখ, যার মানে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট।
এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতি সাংসদের ভোটের মূল্য ৭০০ হওয়ায়, দ্রৌপদী মুর্মু মোট ৫,২৩,৬০০ টি ভোট পেয়েছেন যা মোট বৈধ সাংসদ ভোটের ৭২.১৯ শতাংশ। অন্যদিকে, যশবন্ত সিনহার মোট ভোটের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১,৪৫,৬০০, যা মোট বৈধ ভোটের ২৭.৮১ শতাংশ। বিধায়কদের দ্বিতীয় দফার ভোট গণনা শুরু হয়েছে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সংসদ ভবনের ৬৩ নম্বর কক্ষে আয়োজিত হয় ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোট গণনা। ৬৩ নম্বর কক্ষ সংলগ্ন এলাকাকে স্যানিটাইজ করা হয় এবং ‘নীরব অঞ্চল’ হিসাবেও ঘোষণা করা হয়।
দ্রৌপদী মুর্মু ১৯৫৮ সালে ২০ জুন ওডিশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলের শিক্ষা শেষ করে ভুবনেশ্বরের রামাদেবী মহিলা কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক হন। ওডিশা সরকারের সেচ ও বিদ্যুৎ বিভাগে ক্লার্কের পদে চাকরিজীবন শুরু করেন। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি রায়রাংপুরের শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারে শিক্ষিকার কাজও করেছেন।
১৯৯৭ সালে ওডিশার রায়রাংপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর হন। এরপরই শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক জীবন। দ্রোপদী বিজেপি-র তফসিলি উপজাতি মোর্চার সহ সভাপতি ছিলেন। দক্ষতার সঙ্গে সংগঠন সামলেছিলেন বলে BJP-র দাবি। তাঁর রাজনৈতিক পথ ছিল মসৃণ।
২০০০ সালে রায়রাংরপুর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ভোটে জিতে নবীন পট্টনায়েক নেতৃত্বাধীন বিজেডি-বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হন দ্রৌপদী। প্রথম দফায় শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। পরে তিনি পরিবহণ, পশুপালন ও মৎস্য দফতরও সামলান। ২০০৪ সালে ওই কেন্দ্র থেকে ফের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। রিবহণ, পশুপালন এবং মৎস্য দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল তাঁর হাতে। তাঁর বাবা বিরাঞ্চি নারায়ণ টুডু ছিলেন ঝাড়খণ্ডের নবম রাজ্যপাল।
তিনিই ঝাড়খণ্ডের প্রথম রাজ্যপাল যিনি পাঁচ বছরের কার্যকালের মেয়াদ পূরণ করতে পেরেছিলেন। ২০০৭ সালে ওডিশার সেরা বিধায়ক হিসেবে নীলকণ্ঠ পুরস্কার পেয়েছিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হওয়ারও গৌরব রয়েছে দ্রৌপদীর মুকুটে।
২০১৫ সালের ১৮ মে ঝাড়খণ্ডের নবম রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নেন তিনি। তিনিই ঝাড়খণ্ডের প্রথম রাজ্যপাল, যিনি পুরো মেয়াদ শেষ করেছিলেন। ২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর নাম ভেসে উঠেছিল বিজেপি শিবিরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিহারের রাজ্যপাল রামনাথ কোবিন্দের নামে ছাড়পত্র দেয় গেরুয়া শিবির।
রাজনীতির পথ মসৃণ হলেও, যন্ত্রণাদায়ক ছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। স্বামী ও দুই ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি। বর্তমানে রয়েছেন এক মেয়ে। এবার দ্রৌপদীর ডেস্টিনেশন রাইসিনা হিল।