Doctors Protest পদত্যাগ করতেও রাজি আছি, ওরা বিচার চায় না, চেয়ার চায় ,আমি তিলোত্তমার বিচার চাই, বললেন মমতা , মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ ডাক্তারদের : দেখুন ভিডিও

0
127

দেশের সময়  , কলকাতা : আরজি কর কাণ্ডকে সামনে রেখে বিরোধীরা-সহ অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় এ ব্যাপারে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্নের সভাঘরে দু’ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠক হল না। এর পর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। কিন্তু কেউ কেউ বিচার চান না। চান ক্ষমতার চেয়ার। দেখুন ভিডিও

 নবান্নের লাইভস্ট্রিমিংয়ের সঙ্গে আদালত অবমাননার কোনও সম্পর্ক নেই  সবটাই নাটক বললেন শুভেন্দু ।

বৈঠক না হওয়ায় নবান্নের সামনে বসে পড়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। মমতা জানান, অনেকেই বৈঠকে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে সমঝোতা না করার নির্দেশ এসেছে। বলেন, ‘‘অনেকে বৈঠক করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে নির্দেশ আসছিল। দু’-তিন জন রাজি হননি। আমি মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। ডাক্তারদের অনুরোধ করছি, কাজে ফিরুন।’’

এদিন নবান্নে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় তা ভেস্তে যায়। এরপরই এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা বলেন, “ওদের অনেকে বৈঠকে যোগ দিতে চেয়েছিল। কিন্ত বাইরে থেকে নির্দেশ এসেছে। তাই বৈঠক হল না।”

তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মমতা বোঝাতে চেয়েছেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের ফলে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সমাধান হোক, এটা অনেকেই চাইছেন না। সংশ্লিষ্ট অংশ চাইছেন এমন পরিস্থিতি বজায় থাকুক।

আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীর ধর্ষণ-খুনের শুনানি চলছে সুপ্রিমকোর্টে। গত সোমবার মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে আন্দোলরত চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সময় পেরিয়ে গেলে চাইলে রাজ্য পদক্ষেপ করতে পারে বলেও জানিয়েছিল আদালত।

কিন্তু সোমবার দুপুর থেকেই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে বসে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু পেশার মানুষের সমাজের প্রতি আলাদা করে দায়বদ্ধতা রয়েছে। ডাক্তারি পেশা তেমনই। আমি তিন বার চেষ্টা করলাম। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। তারপরও মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না।”

পরিসংখ্যান তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ৩২ দিন ধরে চলা আন্দোলনের জেরে ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত লক্ষ মানুষ পরিষেবা পাননি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “যে কোনও মৃত্যু মর্মান্তিক। কিন্তু এত মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে?’’ আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর সরকার যে বারে বারে আলোচনায় বসতে চেয়েছে, এদিন তাও স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

১৫ জনের পরিবর্তে এদিন নবান্নে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ৩৪ জনের একটি দল দেখা করতে আসে। সেই দাবি মেনে নিলেও আন্দোলনকারীরা বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে অনড় থাকেন। প্রশাসন তা না মেনে নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে যায়।

ওই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমরা ৩টে ভিডিও ক্যামেরা রেখেছিলাম। ওরা চাইলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো শেয়ার করতাম। যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন, সিবিআই তদন্ত করছে, তাই লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়।”

নবান্নের বৈঠক থেকে মমতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আমি যত দূর জানি, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্য পদক্ষেপ করলে তারা বাধা দেবে না। কিন্তু আমি কিছু করব না। বহু মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত লক্ষ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। আমার হৃদয় কাঁদছে। ওরা ছোট, আমি ওদের ক্ষমা করছি। বাংলার মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। তিন দিন চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারলাম না।’’

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর পরেও যদি জুনিয়র ডাক্তারেরা বৈঠক করতে চান, তবে মুখ্যসচিব এবং নবান্নের অন্যান্য আধিকারিক যেন বৈঠক করেন এবং তাঁদের বক্তব্য শোনেন। তবে তিনি আপাতত আর আলোচনায় থাকছেন না।

নবান্ন থেকে স্বাস্থ্য ভবনে ফিরে আবারও সরাসরি সম্প্রচারে রাজ্যের আপত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেন, “সরাসরি সম্প্রচারে রাজ্য সরকারের কিসের ভয়? আমরা ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। বিচারের পথে যাঁরা বাধা সৃষ্টি করেছে, যাতে কর্মস্থলে নিরাপত্তা থাকে এবং যাতে কর্মস্থলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকে, সে নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। এর আগের ইমেলগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন কি না, সে কথা কোথাও উল্লেখ ছিল না। আলোচনা নিয়ে প্রথম সদর্থক ভূমিকা আমরাই নিয়েছিলাম।”

জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, “আমরা বাইরের কারও কথায় চালিত হচ্ছি না। এটি ভিত্তীহীন কথাবার্তা। মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা আছে। আমাদের সদিচ্ছা আছে। সাধারণ মানুষের সদিচ্ছা আছে। আমরা রাজ্য প্রশাসনের একাংশের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলতে এসেছি। বিচার পেতে ৩৫ দিন চলে গেল। প্রত্যেক মানুষের মৃত্যু দুঃখজনক। আমাদের কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি। মনে হয় আমরা হেরে গেলাম। এত মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু পরিকাঠামো কোথায়?”

আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তারদের আরও বক্তব্য, “আমাদের প্রতিনিধিদল ও সরাসরি সম্প্রচারের কথা বলেছিলাম আগেই। ন্যায্য দাবি ছিল সরাসরি সম্প্রচার। তাঁরা সুস্পষ্ট উত্তর দেননি। আমরা রাজ্যের সর্বোচ্চ অফিসে এসেছিলাম। আমরা ভাই বোনের মতোই তাঁর কাছে। আমাদের নিজেদের স্বার্থ নেই। এটা সাধারণ মানুষের স্বার্থ। তাঁর চেয়ারের দাবিতে আমরা আসিনি। আমাদের বোন ও তাঁর পরিবারের জন্য এসেছিলাম। আবার যে কোনও জায়গায় আলোচনা ডাকলে, আমরা যেতে প্রস্তুত। এখানে ইগোর লড়াই নয়, বিচারের লড়াই। বিচারের স্বার্থ নিয়ে এটা লড়াই। ইগো শব্দ নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। ইগো, জেদ, অহংকার আমাদের নেই। আমরা সবাই এখানে ডাক্তার। আমাদের কাছে যতজন রুগী এসেছেন, সেই সরকারি পরিষেবার রুগীরা ফোন করে বলছেন, তাঁরা আমাদের পাশে আছেন।”

Previous articleDoctor’s Protest LIVE: ভেস্তে গেল বৈঠক? ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষার পরে শুভবুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী
Next articleBihar Hospitalগণধর্ষণের চেষ্টা চিকিৎসকের, ব্লেড দিয়ে যৌনাঙ্গ কেটে দিলেন নার্স!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here