দেশের সময়: বরাবর তিনি ঠোঁট কাটা হিসাবে পরিচিত। সোজাসাপটা কথা বলতে ভালোবাসেন। এজন্য কেউ তাঁকে পছন্দ করেন। অনেকে আবার মুখর হন তাঁর সমালোচনায়। তিনি দিলীপ ঘোষ। বিতর্ক তাঁর পিছু লেগেই থাকে। মহিলাদের সম্পর্কে করা তাঁর মন্তব্য নিয়েও কম সমালোচনা হয় না। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে তিনি যে ভালো সংগঠক, একবাক্যে তা স্বীকার করে নেন শাসক-বিরোধী দুপক্ষই।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে তাঁর নেতৃত্বেই দল যে বাংলায় উল্কার গতিতে এগোচ্ছিল ২০২৪ এর ভোটের পর এসে তা স্বীকার করছেন বিজেপি কর্মীদের অনেকেই। কিন্তু ২০১৯ এ লোকসভায় বাংলায় ১৮টি আসন এবং ২০২১- এ রাজ্যে ৭৭টি আসন জয়ের পরও বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরে যেতে হয় তাঁকে। নতুন সভাপতি হন সুকান্ত মজুমদার। এখানেই শেষ নয়। ঠিক ভোটের মুখে এবার তাঁর আসন বদল করা হয়।
মেদিনীপুরের পরিবর্তে বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে এনে একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী করা হয় তাঁকে। তখন থেকেই চর্চা শুরু হয় দিলীপ ঘোষকে হারাতেই তাঁর আসন পরিবর্তন করা হয়েছে। অবশেষে সেই আশঙ্কায় সত্যি হল। আর হারের পর এ নিয়ে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ। বললেন, রাজনীতিতে চক্রান্ত, কাঠিবাজি সবই থাকে। আমার বিরুদ্ধে সেসব হয়েছিল। আমি মেনেও নিয়েছিলাম। একেবারে শেষ মুহূর্তে আমাকে একটি হারা আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের যারা আমার এই আসনে প্রচারে এসেছেন, তারা জানেন এই সিট কি অবস্থায় ছিল। কিন্তু আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। দেখে যা মনে হচ্ছে একমাত্র এই আসনেই লড়াই হয়েছে। পার্টি আমাকে যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করেছি। আমার কাজে কোথাও এক শতাংশ ফাঁকিবাজি নেই। কিন্তু এটা ঠিক যে বিজেপির সব কর্মী ময়দানে নামেননি। হারের পিছনে আরো অনেক কারণ আছে।
দিলীপ ঘোষের নিশানায় বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। বললেন, ২০২১ পর্যন্ত আমরা দলকে একটা জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরেছিলাম। ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত আমাদের ভোট পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে গত তিন-চার বছরে বাংলায় দল আর এগোতে পারেনি। প্রাপ্ত ভোটের শতাংশও বাড়েনি। এটা কেন হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। আমার সময়ে বাংলায় বিজেপি যেভাবে এগিয়েছে তা দেখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনেকটা অবাক হয়েছেন। কিন্তু তারপর থেকে দল এক জায়গায় আটকে রয়েছে কেন, অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করি আমি। এদিকে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য নিয়ে কিছু বলতে চাননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, দিলীপ দা আমাদের সিনিয়র লিডার। তিনি কি বলেছেন তার উপর মন্তব্য করব না। শুধু এটুকু বলব তিনি জিতলে ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লাগতো।