দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নয়া দিল্লি: শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের পর দিল্লির বুকে আরও একটি হাড়হিম করা খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। মা ও ছেলে মিলে বাবাকে খুন করেছে। ঘটনাটি জুন মাসের। এই খুনের সঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের অনেকটা সাদৃশ্যও রয়েছে। দু’জনকেই খুন করে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছিল। শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে ৩৫ টি টুকরো এবং অঞ্জন দাসের ক্ষেত্রে তা ১০ টুকরো করা হয়েছে। শ্রদ্ধাকে খুন করা হয়েছিল গত ১৮ মে। তবে এক মাস ধরে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছিল। আর জুন মাসে একইভাবে খুন করা হয় অঞ্জন দাসকে। পূর্ব দিল্লির এই খুনের আরেকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নতুন এই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত অঞ্জন দাসের দেহের টুকরো ফেলছে। সাদা-কালো সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মাঠ থেকে একটি প্লাস্টিক ব্যাগ তুলে নিয়েছে এবং তা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, সেই ভিডিয়োতে যাকে দেখা যাচ্ছে সে আর কেউ নয় অভিযুক্ত দীপক। নিজের সৎ বাবা অঞ্জন দাসের কাটা মুণ্ড নিয়ে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, দীপকের মা পুনমের দ্বিতীয় স্বামী হলেন অঞ্জন দাস। মা ও ছেলে গত জুন মাসেই তাঁর খুনের পরিকল্পনা করে ফেলেছিল। শ্রদ্ধা খুনের আদলেই অঞ্জন দাসকে খুনের পর তাঁর দেহের ১০ টুকরো করে তা রেফ্রিজারেটরে রাখা হয়েছিল। তারপর দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় সেই দেহাংশ ছড়িয়ে দেয় দীপক। সিসিটিভি ফুটেজে দীপকের সমস্তটা কীর্তিটাই ধরা পড়েছে।
A woman along with her son arrested by Crime Branch in Delhi's Pandav Nagar for murdering her husband. They chopped off body in several pieces,kept in refrigerator & used to dispose of pieces in nearby ground: Delhi Police Crime Branch
— ANI (@ANI) November 28, 2022
(CCTV visuals confirmed by police) pic.twitter.com/QD3o5RwF8X
পুলিশ জানিয়েছে, পুনম তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর উপর রেগে ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপকের মা জানতে পারে তার সমস্ত গয়না বিক্রি করে দিয়েছেন অঞ্জন দাস। এবং সেই টাকা বিহারে নিজের প্রথম স্ত্রী ও ৮ সন্তানের কাছে পাঠিয়েছেন। তারপরই পুনম আগের পক্ষের ছেলে দীপকের সঙ্গে অঞ্জনের খুনের পরিকল্পনা করে। শ্রদ্ধা খুনের তদন্তে নেমে অঞ্জন দাসের খুনের ক্লু আসে দিল্লি পুলিশের হাতে। দিল্লির বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু দেহের টুকরো পায় পুলিশ। তা কোনও ছেলের বলেই জানতে পারে। তারপর সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায় এক যুবক ও মহিলা সেই দেহাংশ রেখে গিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে পাণ্ডব নগরের বাসিন্দা অঞ্জন দাস বেশ কয়েক মাস ধরেই নিখোঁজ ছিলেন। তবে তাঁর পরিবারের কেউ কোনও অভিযোগও দায়ের করেননি এই মর্মে।
তবে পুলিশি জেরার মুখে পুনম ও দীপক স্বীকার করেছে গত জুন মাসে তারা অঞ্জন দাসকে খুন করেছে। তারা বিস্তারিত জানায়, প্রথমে অঞ্জনের পানীয়তে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তিনি সংজ্ঞা হারাতেই তারপর তাঁকে কোপানো হয়। তারপর দেহ ১০ টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৬ টি দেহের টুকরো উদ্ধার করেছে। আরও ৪ টি দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।