Cyclone Mocha Name : কবে আছড়ে পড়বে নয়া ঘূর্ণিঝড় ? মোচা না মোকা! এই ঘূর্ণিঝড়ের আসল নাম কী?

0
1063

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে নতুন করে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রাট। ইয়েমেন এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম করেছে। ইংরেজিতে নাম মোচা Mocha। আর এরপর থেকেই শুরু আলোচনা। আবার বাংলা বিশ্নেষণ করলে কী দাঁড়ায়! মোচা নাকি মোকা? এই নিয়ে বিভ্রাট তৈরি হয়েছে। আসলে নামের অর্থের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এর রহস্য।

ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি বন্দরের নাম ‘মোখা’ বা ‘মুখা’। যা উচ্চারণ করা হয় মোকা হিসেবে। গোটা বিশ্বে কফি রফতানির জন্য বিখ্যাত ইয়ামেন। সুতরাং কফিপ্রেমীদের কাছে ‘মোকা’ অত্যন্ত পরিচিত নাম। সেক্ষেত্রে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘মোকা’।

প্রসঙ্গত, WMO/ESCAP-এর সুপারিশ মোতাবেক যে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। ১৩টি দেশের সুপারিশ মোতাবেক ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। ‘প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন’ নামের তালিকা থেকে নাম ঠিক করে।

১৬৯টি নামের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রতিটি দেশই নামকরণের সুযোগ পায়। কোনও ব্যক্তি বা দেশ যাতে আঘাত না পায় এমনভাবেই নামকরণ করতে হয় ঘূর্ণিঝড়ের।

বাংলায় কী আছড়ে পড়তে চলেছে মোচা – মোকা? ঠিক কী জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর?

জানা যাচ্ছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর
উপর তৈরি হতে চলেছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। পরবর্তীতে তা নিম্নচাপের রূপ নিতে চলেছে। শুধু তাই নয়, ৯ তারিখে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখনও পর্যন্ত এই নিম্নচাপ তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও তা কোথায় আছড়ে পড়বে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। শীঘ্রই মোকার ল্যান্ডফলের বিষয়ে আপডেট দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

যদিও আমেরিকা ও ইউরোপের আবহাওয়া সংস্থা জানাচ্ছে, ১৪ মে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। ইতিমধ্যেই মোকার মোকাবিলায় তুঙ্গে প্রস্তুতি। ওডিশা প্রশাসনের
তরফে ইতিমধ্যেই একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।

পাশাপাশি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিও প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই দেশের আবহাওয়া দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে যদি ঘূর্ণিঝড় মোকার কোনও প্রভাব বাংলাদেশে পড়ার আশঙ্কা থাকে সেক্ষেত্রে মোকাবিলায় প্রস্তুত হাসিনার দেশ, এমনটাই জানানো হচ্ছে ওপার বাংলার প্রশাসনের তরফে।

এদিকে আজ ফের রাজ্যে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস। কলকাতা সহ উত্তর এবং দক্ষিণ দুই বঙ্গেই দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে, চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মোকা। তবে তার ঠিক কী প্রভাব রাজ্যের উপর পড়তে চলেছে, এখনও সেই বিষয়ে স্পষ্ট করেনি হাওয়া অফিস।

সকাল থেকেই শহরের আকাশ আংশিক মেঘলা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, এদিন শহরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। দিনভর দুর্যোগের পরিস্থিতি থাকতে পারে।
বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম এবং এদিন শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক ৯০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৭ শতাংশ।

শুক্রবার থেকে বদলাতে পারে আবহাওয়ার পরিস্থিতি। বাড়তে পারে তাপমাত্রার পারদ। এমনকী, পশ্চিমের কিছু জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছুঁতে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।

এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।

দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই আজ রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। সঙ্গে কিছু কিছু জায়গায় ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া, এমনটাই পূর্বাভাস। শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে হাওয়া বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। ৫ তারিখ শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে হতে পারে ছিটে ফোঁটা বৃষ্টিপাত।

এদিন উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলাগুলিতেও রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। শুক্রবারও সেখানে কিছু কিছু জেলায় হতে পারে বৃষ্টি। শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলায় কি আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় মোকা?
এই প্রসঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আগামী ৬ মে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। ওই স্থানেই তা নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং ৮ তারিখ নাগাদ তা নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর ৯ তারিখ মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।

মোকার ল্যান্ডফল কোথায় হবে, তা এখনও স্পষ্ট করেনি আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে বাংলায় এর কতটা প্রভাব পড়তে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। আর এই অবস্থায় আগে থেকে সতর্ক নবান্ন। ঝড়ের আশঙ্কা তৈরি হতেই বৈঠকে বসেন  রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। নবান্নে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। ওই বৈঠকে ঝড় নিয়ে উপকূলবর্তী জেলাকে সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে।

পাশাপাশি আগে থেকে যাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয় সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে। সমস্ত জেলাগুলিকেই এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। নবান্নেও কন্ট্রোল রুম খোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ৬ মে-র পর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ও প্রভাব নিয়ে আদতেও আশঙ্কা রয়েছে কিনা বাংলার তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Previous articleWeather update: আকাশ কালো করে বজ্রপাত সহ বৃষ্টি বনগাঁয়, ভরদুপুরে সন্ধে নামল শহরে : দেখুন ভিডিও
Next articleThinking Of Him’: রবি ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মবার্ষিকীতে ‘দ্য ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার’- এর উদ্যোগ, প্রদর্শিত হবে ‘থিঙ্কিং অফ হিম’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here