দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ধেয়ে আসছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। ইতিমধ্যেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া গুজরাট ও সংলগ্ন রাজ্যে। বুধবার সকাল থেকে পোরবন্দরে ঝোড়ো ও ভারী বৃষ্টির জেরে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। উপড়ে পড়েছে বহু গাছ। উত্তাল সমুদ্র। বন্ধ করা হয়েছে একাধিক বন্দর। ১৬ জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
হাওয়া অফিস সতর্কবার্তায় আরও জানিয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে কচ্ছ, দেবভূমি দ্বারকা, পোরবন্দর, জামনগর ও মোরবি জেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ৩০ হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগাম সতর্কতা হিসেবে ১৫ জুন পর্যন্ত ৯৫টি ট্রেন বাতিল করেছে রেল।
মৌসম ভবন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’-এর কারণে গুজরাট-সহ রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গোয়া, লাক্ষাদ্বীপে ভারী বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বজায় থাকবে।
রাত পোহালেই আছড়ে পড়বে ‘বিপর্যয়’, ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে বিপর্যয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ল্যান্ডফল হতে পারে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস এমনটাই।
১৫ জুন গুজরাটের কচ্ছ ও পাকিস্তানের করাচির মধ্যবর্তী কোনও জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে বিপর্যয়। ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের আগে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে ভারতীয় সেনা । গুজরাটের ভূজ, জামনগর, গান্ধীধাম, ধারাংধারা, ভদোদরা ও গান্ধীনগরে দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেগুলিতে সেনার তরফে সবরকম প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি নালিয়া, দ্বারকা ও আম্রেলির মতো কিছু ফরওয়ার্ড লোকেশনেও প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে।
গুজরাতের উপকূলবর্তী এলাকাগুলি থেকে ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোথায় হবে বিপর্যয়ের ল্যান্ডফল? আরব সাগরর তীরবর্তী ভালসাদ এলাকায় তিথাল সমুদ্র সৈকতে বিশালাকার ঢেউ দেখা যাচ্ছে। সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসেবে সমুদ্র সৈকতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কেরল, কর্নাটক ও লক্ষদ্বীপেও সাইক্লোন অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কেরালার তিরুঅনন্তপুরম, কোল্লাম, পাথানামঠিট্টা, আলাপ্পুঝা, কোট্টায়াম, ইদ্দুকি এবং কোঝিকোড়ে এবং কন্নুরে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, আরব সাগর এবং সংলগ্ন পশ্চিম মধ্য আরব সাগরে ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইবে। দমকা হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটারেও পৌঁছে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়র ল্যান্ডফলের সময় হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটারে পৌঁছে যেতে পারে।
সমুদ্র বন্দরগুলিতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রয়োজনে মাঝ সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলিকে ঝড়ের সতর্কবার্তা পাঠাবে তারা। দীনদয়াল বন্দর থেকে ইতিমধ্যেই ছ’টি জাহাজ ছাড়া হয়ে গেছে। গুজরাতে এখনও পর্যন্ত জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৮টি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি দল রয়েছে কচ্ছে, দুটি জামনগরে, তিনটি করে টিম রাখা হয়েছে রাজকোট ও দ্বারকায়। এছাড়া পোরবন্দর, সোমনাথ, মোরবি, ভালসাদ ও জুনাগড়ে একটি করে টিম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। দিউয়েও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি টিম রাখা হয়েছে।