দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে ইতিমধ্যেই করোনার নয়া প্রজাতি ভারতে ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংক্রমিত হয়েছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত দেশবাসী।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত ১৮,৮৪০ জন। যা শুক্রবারের তুলনায় সামান্য বেশি। দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি অ্যাকটিভ কেসও বেড়েছে। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগী বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২৮। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা প্রাণ কেড়েছে ৪৩ জনের। দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট মৃত ৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৮৬ জন। দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ বেশ চিন্তায় ফেলেছে।
দৈনিক সংক্রমণে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কেরল। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৩,৩১০ জন। দ্বিতীয় স্থানে বাংলা। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২,৯৫০ জন। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মহারাষ্ট্র (২৯৪৪), তামিলনাড়ু (২৭২২) এবং কর্নাটক (১০৩৭)। দিল্লির দৈনিক সংক্রমণ অবশ্য নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৬,১০৪ জন।
দেশে এখনও অবধি সুস্থ ৪ কোটি ২৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৮০ জন। সুস্থতার হার ৯৮.৫১ শতাংশ। সংক্রমণ বাগে আনতে বুস্টার ডোজে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার করতে বলছেন চিকিৎসকরা।
দেশে পাওয়া গিয়েছে করোনাভাইরাসের সাব ভ্যারিয়্যান্ট। কিছুদিন আগেই একথা জানিয়েছিলেন WHO-এর ডিরেক্টর জেনারেল Tedros Adhanom Ghebreyesus। ভারতেই প্রথম করোনার এই সাব ভ্যারিয়্যান্ট পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এদিকে দেশে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি দেশে আছড়ে পড়বে করোনার চতুর্থ ঢেউ? কতটা ভয়াবহ ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়্যান্ট BA.2.75? এবার এই যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন Indian SARS-CoV-2 Genomics Consortium (INSACOG)-এর এক বিশেষজ্ঞ ৷
তাঁর কথায়, “এই নতুন ভ্যারিয়্যান্টের জেরে দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত, বা করোনায় অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়েনি। কোনও নির্দিষ্ট একটি বা দুটি জেলাতে নয়, এই সব ভ্যারিয়্যান্ট বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়েছে, যা একটি ভালো দিক বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ কারণ কোনও নির্দিষ্ট এলাকা থেকে অত্যাধিক সংক্রমণের কোনও খবর আসছে না। BA.2-র সঙ্গে তুলনা করলে এই সাব ভ্যারিয়্যান্টটি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অধিক সংক্রামক। কিন্তু, তা সত্ত্বেও কোনও জায়গায় সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত না হওয়ার মানে হল এই সাব ভ্যারিয়্যান্ট যে খুব সংক্রামক তা নয়। আবার তা গুরুতর কোনও রোগ সৃষ্টি করছে না।”
করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের ফলে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনেই। এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন এন কে আরোরা। তিনি বলেন, “ভারতে করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হচ্ছে এটা সত্য নয়। তিনি বলেন, “নতুন কোনও ‘ভ্যারিয়্যান্ট অফ কনসার্ন’ এলেই নতুন করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ে। ওমিক্রনের জন্য দেশে আছড়ে পড়েছিল করোনার তৃতীয় ঢেউ। এখন নতুন কোনও ভ্যারিয়্যান্টের হদিশ পাওয়া যায়নি। ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়্যান্ট নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।”
তিনি আরও জানান, “এই মুহূর্তে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই সাব ভ্যারিয়্য়ান্টগুলি কোনও গুরুতর রোগের মুখে সাধারণ মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে কিনা। এই পরিস্থিতির দিকে কড়া নজরদারি চালাতে হবে। যদি করোনা আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় সেক্ষেত্রে তা উদ্বেগজনক। করোনা আক্রান্তদের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের দিকে জোর বাড়াতে হবে।” উল্লেখযোগ্যভাবে দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, ১৮ হাজার ৮৪০ জন। এই সময়ে করোনা প্রাণ কেড়েছে ৪৩ জনের।