দেশের সময়, বনগাঁ : টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনেই রাজ্যে ১ লক্ষের বেশি পড়ুয়াকে টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত ১ লক্ষ ১ হাজার ১১ জন বাচ্চাকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী যে বাচ্চাদের এ দিন টিকাকরণ হয়েছে, তাদের কারও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর এ দিন প্রতিবেদ প্রকাশের সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সূত্রের খবর, টিকাদানে গতি আনতে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকা আরও দ্রুত দেওয়ার জন্য টিকাকরণ কেন্দ্র আরও বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কলকাতায় ১৬ থেকে বাড়িয়ে স্কুলের সংখ্যা করা হচ্ছে ৩৪। প্রথমে ঠিক ছিল ১৬টি বরোর ১৬টি স্কুলে টিকা দেওয়া হবে। আজ সিদ্ধান্ত হয়, কলকাতায় ৩৪টি স্কুলে দেওয়া হবে। শুধু কলকাতা নয়, জেলাতেও আজ টিকাকরণের রক্রিয়া শুরুই হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের ৪৯০টি স্কুল থেকে প্রথমদিন টিকা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বড়দিনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণের কথা ঘোষণা করেন। ৩ জানুয়ারি থেকে টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা ক্রেছিলেন তিনি। সেই মতোই আজ থেকে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল নাম নথিভুক্তকরণ প্রক্রিয়া। কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমেই নাম নথিভুক্ত করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার মারণ ক্ষমতার হাত থেকে রক্ষা পেতে অন্যতম হাতিয়ার টিকা নেওয়া। গোটা দেশ জুড়ে প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনের মতো প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে ৬০ উর্দ্ধ বয়সীদের টিকা দেওয়া হয়। এরপর ধাপে ধাপে ১৮ বছরের উর্দ্ধে সমস্ত শ্রেণীর সাধারণ মানুষকে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
এবারে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়াদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হল। এদিন অন্যান্য জেলার মতো উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ হাইস্কুলে পড়ুয়াদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে হাজির হন পুর প্রশাসক গোপাল শেঠ, পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা: মৃগাঙ্ক সাহা রায় সহ অন্যান্যরা।
এবিষয়ে গোপাল শেঠ জানান, ‘সরকারি নির্দেশ মেনে সোমবার থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী পড়ুয়াদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হল ,এদিন ২২২ জন পড়ুয়াদেরকে টিকা দেওয়া হয়েছে।’
টিকা নেওয়ার পর ছাত্ররা জানান, ‘এতোদিন ভয়ে ভয়ে স্কুলে আসতাম। টিকা নিয়ে নিশ্চিন্ত লাগছে। এখন অনেকটাই নির্ভয়ে স্কুলে আসতে পারবো।’
এ দিকে, সোমবার থেকেই রাজ্যে স্কুল- কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কীভাবে ক্লাস হবে, তার জন্য সোমবারি বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। মোট পাঁচ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সোমবার থেকে স্কুল বন্ধ করা নির্দেশিকা জারি করা হলেও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকাতে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি যেতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যায় তাদের পঠন-পাঠন সংক্রান্ত পরিস্থিতি এবং তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য সেই বিষয় নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তা বাধ্যতামূলক না করার বদলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরামর্শ হিসেবেই তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে দফতর।