সুপ্রকাশ চক্রবর্তী :ষোড়শ শতাব্দীতে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর হাত ধরে বাংলায় ভক্তি আন্দোলনের এক নব দিগন্ত উন্মোচিত হয়। পরবর্তী কালে তাঁর পার্ষদরা বাংলা, ওড়িশ্যা সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রচার ও বিস্তার করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর পর কেদারনাথ দত্ত বা ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী প্রভুপাদ ও এ সি ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ তা দেশের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে দেন।

আজ সারা বিশ্বের মানুষ মহাপ্রভুর ভাব ধারায় অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। এই গৌড়ীয় ভাবধারা ও বিস্তারের ইতিহাস এশিয়াটিক সোসাইটি ও ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেণ্টারের যৌথ উদ্যোগে প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হল কলকাতার এসিয়াটিক সোসাইটির হেরিটেজ ভবনে।

এই প্রদর্শনী চলবে ১৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর দুটো থেকে সন্ধ্যে সাতটা প্রদর্শনী খোলা থাকবে সকলের জন্য। ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের রিসার্চার ও কিউরেটর সৌরিশ দাস জানান, প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে মহাপ্রভুর জীবন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে তৎকালীন কিছু প্রামাণ্য পুঁথি, পেন্টিং ও রেপ্লিকা। মহাপ্রভুর হাতের লেখা পুঁথি যেটা গৌরাঙ্গ টোল মন্দির নবদ্বীপে রয়েছে, এছাড়া এশিয়াটিক সোসাইটিতে থাকা বিভিন্ন পুঁথি ও দিপেন বোসের ১৯৬০ দশকের আঁকা মহাপ্রভুকে নিয়ে আঁকা নানা ছবি সেগুলিও প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়া মহাপ্রভুর জীবন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিদিন নানা আলোচনার আয়োজনও করা হয়েছে।

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ভারতীয় মহাকাব্য ও পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এশিয়াটিক সোসাইটির এডমিনিস্ট্রেটর লেফটেন্যান্ট কর্নেল অনন্ত সিনহা ও ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের ডিন আকাদেমিক ড. সুমন্ত রুদ্র ও শিল্পপতি নুপুর দেশাই। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, মহাপভুকে নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। এখনও অনেক কিছু কাজ বাকি আছে।

একজন মানুষ হিসাবে চৈতন্যদেব যেভাবে ভগবানের জায়গায় পৌঁছে ছিলেন সেই দীর্ঘ পথের গবেষণার ক্ষেত্রে যা কাজ হয়েছে তার পরেও আরো অনেক দিক নজর দেওয়া দরকার। এসিয়াটিক সোসাইটির এডমিনিস্ট্রেটর লেফটন্যান্ট কর্নেল অনন্ত সিনহা বলেন, বাংলার অনেক বড় সমাজ সংস্কারক ছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু।

ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের ডিন ডক্টর সুমন্ত রুদ্র বলেন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যে প্রেম ও ভক্তির বাণী ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তা আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মহাপ্রভুর এই ভাবধারাকে তুলে ধরতেই এই প্রদর্শনী।

শিল্পপতি নুপুর দেশাই বর্তমান সময়ে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের প্রাসঙ্গিকতাকে তুলে ধরেন।