BJP Nabanna Abhijan:ডোন্ট টাচ মাই বডি, পুরুষ পুলিশকে ডাকুন, অভিযানের শুরুতেই বাধায় শুভেন্দু,আটক করল পুলিশ ! বিজেপির নবান্ন অভিযানের বিরোধিতায় মামলা হাইকোর্টে

0
767

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বৃষ্টি হচ্ছে শহর জুড়ে, তবে সেই বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আজ দুর্নীতির প্রতিবাদে নবান্ন অভিযান বিজেপির নেতা-কর্মীদের।

উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ থেকে হাজার হাজার কর্মী এসে জমায়েত হয়েছেন হাওড়া-শিয়ালদহ স্টেশনে। কেউ কেউ এখনও আসছেন রাস্তায়। পরিকল্পনা তিনদিক থেকে অভিযান হবে নবান্ন অভিমুখে। কলেজ স্কোয়ার থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মিছিল নিয়ে যাবেন দিলীপ ঘোষ, সাঁতরাগাছি থেকে মিছিল নিয়ে আসবেন শুভেন্দু অধিকারী এবং হাওড়া থেকে মিছিল যাবে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে। মিছিল শুরু হয় বেলা ১টায়।

নবান্ন অভিযান দিয়ে শুরু। পর্ব শেষ হবে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন পর্ব শেষ করে। সেই লক্ষ্যেই নবান্ন অভিযানকে সফল করতে জোর কদমে নেমেছে বিজেপি শিবির। আর বিজেপির নবান্ন অভিযানে অন্যতম সেনাপতির ভূমিকায় রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাঁতরাগাছি থেকে যে মিছিল করে নবান্ন অভিযানে আসবে বিজেপি কর্মীরা, তার নেতৃত্বে থাকার কথা শুভেন্দুর। কিন্তু মঙ্গলবার বেহালা থেকে সাঁতরাগাছির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পরই দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ওঠার সময় আটকে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দুকে। আর এরপরই চরম ক্ষোভ দেখিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন বিরোধী দলনেতা।

পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় শুভেন্দুর। কলকাতার দিক থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে ওঠার মুখে যে ব্যারিকেড করে পুলিশ, সেটি ভাঙার চেষ্টা করেন বিরোধী দলনেতা। পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ”এখনই হাইকোর্টে ফোন করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হায় হায়। আমি বিরোধী দলনেতা, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আটকানো হচ্ছে। ভয় পেয়েছে মমতা, ক্ষেপে গেছে জনতা।”  এর কিছুক্ষণ পরেই শুভেন্দুকে আটক করে পুলিশ।

তবে তার আগেই, মঙ্গলবার সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তা শহর জুড়ে। নবান্নমুখী একাধিক রাস্তা জুড়ে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড-গার্ডরেল। শুধু কলকাতা নয়, কলকাতার বাইরেও, হাওড়া, কোনা এক্সপ্রেস সহ একাধিক জায়গায় রাস্তা জুড়ে কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন করা হয়েছে বহু পুলিশ। আজকের সমগ্র নিরাপত্তার দায়ত্বে থাকছেন দময়ন্তী সেন, শহরের একাধিক জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবেন দু’জন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। গোটা ঘটনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভাল করার জন্য থাকছেন ৩২ জন অ্যাসিসেন্ট কমিশনার, ১৮ জন ডিসি পদমর্যাদার আধকারিক ৬২ জন ইনস্পেক্টর।

ইতিমধ্যে বহু কর্মী এসে উপস্থিত হয়েছেন কলকাতায়। সূত্রের খবর, তার মধ্যেই বিজেপির নবান্ন অভিযান নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। তিনদিক থেকে নবান্ন পৌঁছতে বদ্ধপরিকর গেরুয়া শিবির, অন্যদিকে কড়া নিরাপত্তা শহর জুড়ে। শুধু কলকাতা নয়, জেলায় জেলায় কড়া নিরাপত্তা। ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে বিজেপি কর্মীদের মিছিল। একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছেন কর্মীরা।

সূত্রের খবর, নবান্ন অভিযান নিয়ে ইতিমধ্যে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারী  এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম নির্দেশের কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, মামলা কারী জানিয়েছেন, জাতীয় সড়োক আটকে, জনজীবন বিপর্যস্ত করে সভা সমিতি করায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে। তার পরেও কিভাবে এই মিছিল?

সাঁতরাগাছি যেতেই পারলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আটকে দেওয়া হল সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য নেতা রাহুল সিনহাকেও।


মঙ্গলবার ১ টা থেকে শুরু হয় বিজেপির নবান্ন অভিযান। কিন্তু গঙ্গা পার হওয়ার আগেই আলিপুরে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের সামনে শুভেন্দু, লকেটদের আটকে দেয় পুলিশ। তারপর প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় তাঁদের। তবে ১৫ মিনিট ধরে যে তর্কাতর্কি চলে শুভেন্দু ও পুলিশের মধ্যে তা ছিল রীতিমতো শোনার মতো।

একসময়ে এক মহিলা পুলিশকর্মীরা শুভেন্দুর হাত ধরে টেনে বলেন, আপনি চলুন স্যার। তাঁদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, “আপনি পুরুষ পুলিশ ডাকুন। ডোন্ট টাচ মি। ডোন্ট টাচ মাই বডি। একি আপনি আমাকে টাচ করছেন কেন?” শুভেন্দু এ ভাবে বাধা দিতেই এগিয়ে আসেন পুলিশ কর্তা আকাশ মেঘারিয়া। শুভেন্দু তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা কী ভেবেছেন? মহিলা পুলিশ দিয়ে আমাকে অপদস্ত করছেন কেন? আমার কাছে ফুটেজ রইল। হাইকোর্টে যাব।

সাঁতরাগাছি থেকে মিছিল করে আসেনন খোদ শুভেন্দু অধিকারী, সেখান থেকে নবান্নমুখী রাস্তায় বসানো হয়েছে গার্ডরেল। কোন এক্সপ্রেসের হাওড়ামুখী রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তা আটকে রয়েছে ডানকুনিতেও।

অন্যদিকে বিজেপির মিছিল ঘিরে শুধু কলকাতা নয়, ধুন্ধুমার পরিস্থিতি জেলায় জেলায়।

কাঁথি-নন্দীগ্রাম-বাঁকুড়া একাধিক জেলায় বিজেপি কর্মীদের নবান্নমুখী মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় হাওড়া ব্রিজের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ দ্বিতীয় হুগলি সেতুও।

বিজেপির মিছিলের কারণে শহরের একাধিক জায়গায় ব্যারিকেড, যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে একাধিক জায়গায়। দুপুর ১২ টা থেকে মিছিল সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এমজি রোড এবং স্ট্রান্ড রোডে। বিকল্প পথ হিসেবে কিংসওয়ে, আরআর অ্যাভিনিউ, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, এক্সাইড মোড় ব্যবহার করা কথা বলা হয়েছে।

সকাল ৮টা থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতু এবং ১২টা থেকে হাওড়া ব্রিজে কড়া নিরাপত্তা থাকছে। কলকাতা এবং তার আশেপাশের জায়গা এককথায় মুড়ে ফেলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তায়। হাওড়া পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে হাওড়া ময়দান বা সাঁতরাগাছি থেকে আসা মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়নি তাদের পক্ষ থেকে। তমলুক, ডানকুনি, পাত্রসায়ের, নন্দীগ্রাম সহ রাজ্যের একাধিক জায়গা, যেখান থেকে কর্মীরা আজ আসছেন নবান্ন অভিযানের জন্য, অভিযোগ তাঁদের অ্যাটকে দেওয়া হয়েছে।

জায়গায় জায়গায় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসা পুলিশের, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আসছেন কেউ কেউ। চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে একাধিক জায়গায়। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, যেখানেই আটক করা হবে সেখানেই বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাবেন কর্মীরা।

এদিকে, বিজেপি বিধায়িকাকে নবান্ন অভিযানে যেতে বাধা, প্রতিবাদে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের ক্ষোভ, বিক্ষোভ এবং জাতীয় সড়কে অবস্থান অবরোধ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা তমলুকের সোনাপেতা টোলপ্লাজা এলাকায়! উত্তেজিত বিজেপির কর্মী সমর্থকরা পুলিশের সামনেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি সহ ব্যানারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। হলদিয়া থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে হলদিয়ার বিজেপি বিধায়িকা তাপসী মণ্ডলকে হলদিয়া জাতীয় সড়কে সোনাপেতা টোল পাজার কাছে আটকায় পুলিশ। আর সেখানেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা।

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের অভিনন্দন এবং ছবি সহ লেখা হোডিং ছিঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি বিধায়ক।

Previous articleDurga Puja: পুজোয় শর্তসাপেক্ষে অনুদান দেওয়া যাবে, হাইকোর্টের রায়ে বড় স্বস্তি রাজ্যের
Next articleNabanna Abhijan:রণক্ষেত্র
সাঁতরাগাছি, পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা, ইটবৃষ্টি!পাল্টা জলকামান-টিয়ারগ্যাস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here