দেশের সময়, বনগাঁ: গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি এলাকা। সেখানে মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে সেই অভিযোগেই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন মহিলা সহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। এবার সন্দেশখালির ঘটনায় আন্দোলনে নামল বনগাঁর বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজেপি নেতা বললেন ‘দলদাস’ কাজ করছে না পুলিশ-প্রশাসন। প্রয়োজন নেই থানার। তাই, থানার ইট খুলে মন্দির বানানো হবে। দেখুন ভিডিও
প্রসঙ্গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে তৃণমূলের নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে মারমুখী অনুগামীদের তাড়ায় পালিয়ে বাঁচতে হয় ইডিকে। তার পর থেকেই বেপাত্তা শাহজাহান। কিন্তু সন্দেশখালির উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে গত কয়েক দিন ধরে।
এ বার গ্রামবাসীদের নিশানায় শাহজাহান, তাঁর ডান হাত শিবু হাজরা এবং বাঁ হাত বলে পরিচিত উত্তম সর্দার। পথে নেমে ওই নেতাদের সম্পত্তি ভাঙচুর করে, আগুন ধরিয়ে তাঁদের গ্রেফতারির দাবি করতে থাকেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা। শেষ পর্যন্ত শনিবার উত্তমকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করে তৃণমূল। সে দিনই উত্তমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তাতে খুশি নন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, শাহজাহান, শিবু হাজরাদেরও গ্রেফতারির। যদিও তাঁরা এখনও অধরা।
এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বিজেপির স্থানীয় নেতা বিকাশ সিংহকে। তারই প্রেক্ষিতে সন্দেশখালির বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের পক্ষ নিয়ে রবিবার সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর বাটার মোড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে বিজেপি। সেখানেই থানার ইট খুলে মন্দির বানানোর কথা ঘোষণা করেন যুব মোর্চার জেলা সভাপতি রাজীব রায়।
এদিন বিজেপির যুব মোর্চার পক্ষ থেকে বনগাঁযর বাটার মোড়ে যশোর রোড অবরোধ করা হয়। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায় শহর। পুলিশের সঙ্গেও বচসা শুরু হয় বিজেপি সমর্থকদের । তার পরই পুলিশকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘সন্দেশখালিতে বর্বরতা চলছে। আমরা কি ২০২৪ সালে বাস করছি? ভারত যেখানে বিশ্বগুরু হয়ে দুনিয়াকে পথ দেখাচ্ছে সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিসে মহিলাদের নির্যাতন করা হচ্ছে! কোন রাজ্যে বাস করছি? এতে সম্পূর্ণ মদত আছে পুলিশ-প্রশাসনের।
তাই পুলিশ-প্রশাসনকে বলা, তারা যদি আগামিদিনে পদক্ষেপ না করে, তা হলে যুব মোর্চাই পদক্ষেপ করবে এবং থানা থেকে ইট খুলে নিয়ে এসে আমরা মন্দির বানাব।’’
বেলা ১২টা থেকে যশোর রোড অবরোধ কর্মসূচি চলে মিনিট ৪৫। তার পর পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা।
একই সঙ্গে এদিন গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাজারেও যশোর রোডের উপর বিক্ষোভ অবরোধ করে গাইঘাটা থানা ঘেরাও করেন বিজেপির নেতা, কর্মীরা। পাশাপাশি, বাগদা থানাতে বিক্ষোভ, ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হয়। দুই জায়গাতেই বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বনগাঁয় যুব মোর্চার সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল।