দেশের সময়, বাগদা: গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় দিদির দূত’ কর্মসূচিতে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস গ্রামে গ্রামে ঘুরছিলেন মানুষের সমস্যা শুনতে। ‘দিদির দূত’ হয়ে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার কনিয়াড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুলনি গ্রামে। সেখানে গিয়ে বিধায়ক শোনেন, বিয়ে হচ্ছে না এলাকার যুবক – যুবতীদের। কারণ, প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জীর্ণ দশা ছিল রাস্তার । এমনই খারাপ পরিস্থিতি যে পাত্র -পাত্রীপক্ষ ছেলে, মেয়ে দেখতে এসেই একের পর এক বিয়ে নাকচ করে দিয়ে ফিরে চলে যান।
অবশেষে এই ‘পথের দাবি’র কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে তোলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। মমতার নির্দেশে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে প্রশাসন। অবশেষে শুরু হল নতুন রাস্তা তৈরির কাজ। শনিবার ফিতে কেটে নারকেল ফাটিয়ে নতুন রাস্তার শিলান্যাস করেন বিধায়ক । বিশ্বজিৎ বাবুর কথায়, ‘এ বার বিয়ে করতে আর বাধা পাবেন না এলাকার যুবক – যুবতীরা।’’ নতুন রাস্তার কাজ শুরু হতে হাসি ফুটেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে।
বিধায়কের কথায়, ‘‘আমি যে দিন এই রাস্তায় যাতায়াত করেছিলাম, মানুষ রাস্তার দাবি জানিয়েছিলেন। স্কুলে যাওয়ার সময় অনেক সময় ছেলেমেয়েরা জুতো হাতে করে রাস্তা পার হয়েছে। এই রকম ঘটনা নজিরবিহীন। এই কথাটা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার রাস্তা ২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে। তার শিলান্যাস হল আজ। এলাকার মানুষ এতে খুশি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘সে দিন অনেক স্থানীয় ছেলেরা এসে বলেছিল, আমাদের বিয়ে হচ্ছে না। এ বার সেই রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হবে। তাদের মুখে হাসি ফুটবে। যুবকদের বিয়ে করতে আর বাধা রইল না।’ বিধায়কের এই কথা শুনে স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক বিকাশ বিশ্বাস বলেন, শুধু ছেলে নয় এই গ্রামের বহু মেয়েদেরও বিয়ে আটকে গিয়েছিল এই রাস্তার কারণে। বিধায়কেরএই উদ্যোগের ফলে আমরা সবাই খুবই খুশি। বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, পুরো রাস্তার কাজ শেষ হতে মাস দেড়েক লাগবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে ধুলনি গ্রামে এসেছিলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ। বিধায়ককে সামনে পেয়ে রাস্তা খারাপের অভিযোগ করেন স্থানীয় মানুষ। সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করাই যেত না বলে অভিযোগ করা হয়। অনেকে সেই সময় বলেন, ‘‘রাস্তা খারাপ বলে ছেলে – মেয়ে বিবাহযোগ্যদের বিয়েও হচ্ছে না।’’ সরেজমিনে রাস্তার বেহাল দশা দেখে তা খাতায় লিখে চলে গিয়েছিলেন বিধায়ক। অবশেষে সেই রাস্তা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাস্তার জন্য প্রায় ২কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। শনিরবার সকালে বিধায়ক ফিতে কেটে নারকেল ফাটিয়ে নতুন রাস্তার শিলান্যাস করতেই বাগদার ধুলনি গ্রামে খুশির হাওয়া ।