সুমন রায় : মঙ্গলবার দুপুরে বড় দুর্ঘটনা ঘটল বীরভূমের মল্লারপুরে। আদিবাসী মানুষদের নিয়ে একটি অটো যাচ্ছিল রামপুরহাটের দিকে। উল্টোদিক থেকে ছুটে আসা একটি সরকারি বাস পিষে দেয় অটোটিকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ন’জনের। দেখা যায় রাস্তাতেও দেহ ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে।
মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের রামপুরহাট থানার মল্লারপুরে তেলডা গ্রামের কাছে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রামের কাছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। মৃতদের বাড়ি রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের কাষ্টগোড়ার পঞ্চায়েতের পারকান্দি গ্রামের আদিবাসী পাড়ায়। মাঠের কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথেই ঘটে এই দুর্ঘটনা বলে জানা যায় পুলিশ সূত্রে৷
সূত্রের খবর, দলবেঁধে ধান পোঁতার কাজ সেরে গ্রামে ফিরছিলেন অটোতে থাকা যাত্রীরা। তখনই এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনাটি ঘটে। অটোর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় একটি বাসের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সকলের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অটোচালক সীতারাম হেমব্রম (২১) সহ আট মহিলা শ্রমিকের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে যশোমতী হেমব্রম (৫০), হাপানকালী বেসরার (৩০) পরিচয় এখনও পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শী সুমন রায় বনগাঁ মন্ডল পাড়ার বাসিন্দা বলেন, “আমি রামপুরহাট থেকে বনগাঁর দিকে ফিরছিলাম। তখন একটা সরকারি বাস মালদহ থেকে সিউড়ির দিকে যাচ্ছিল। আর অটোটা মল্লারপুরের দিক থেকে আসছিল। অটোতে সেই সময় মাঠে ধান পোঁতার কাজ সেরে বেশ কয়েকজন বাড়ি ফিরছিলেন।
মল্লারপুরে তালবোনার দিকে ধান পুঁততে গিয়েছিলেন। তবে অটোটা ঠিক সাইড দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু, তারপরও ঘটে গেল দুর্ঘটনা। চোখের সামনে ঘটে গেল এ ঘটনা। তীব্র আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন এলাকার অন্য বাসিন্দারাও। অটো সরাতেই দেখা যায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন মারা গিয়েছেন।”
এদিকে এ ঘটনায় পারকান্দি গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, “বাসটিই নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ধাক্কা মারে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি”।
মৃত অটো চালকের বাবা সিরু হেমব্রম বলেন, “প্রতিদিন ভোরের দিকে ছেলে অটো নিয়ে মল্লারপুরের কাছে গৌরবাজার যায় মহিলাদের নিয়ে। সেখানে চাষের কাজ করে মহিলারা। বিকেলে কাজ শেষ হলে পুনরায় তাদের অটোতে ছড়িয়ে বাড়ি ফেরে।
এদিন ভোর ৪ টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বিকেলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিল। ফেরার সময় দুর্ঘটনার কবলে পরে। আমি এলাকার একটি রাইস মিলে কাজ করি। খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি ছেলের মৃতদেহ। ছেলেকে প্রথমে চিনতে পারিনি। পোশাক দেখে শেষে চিনতে পারি।” এদিকে ইতমধ্যেই মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী।