দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ তিন দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেদিনই
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিক সাড়ে চারশো মিটার ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিক সাড়ে তিনশো মিটারের মধ্যেই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটল! এই ঘটনায় স্বভাবতই আতঙ্কে এলাকাবাসী।
গোটা এলাকা সিসিটিভিতে মোড়া। কড়া নিরপাত্তার বেষ্টনী। এমত ‘হাই সিকিউরিটি’ জোনে জোড়া খুনের ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে।
সোমবার ভরসন্ধেয় ভবানীপুরে গুজরাতি দম্পতি খুনের তদন্তে এবার পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিলেন মমতা। ফোনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে’।
ভবানীপুর দম্পতি খুনের ঘটনায় পুলিশকে ভাবাচ্ছে একাধিক তথ্য। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেই কি ধরা পড়বে আততায়ীর চেহারা?
ইতিমধ্যেই ভবানীপুরের এই জোড়া খুনের ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। সঙ্গে তদন্ত চালাচ্ছে ভবানীপুর থানার পুলিশও। সূত্রের খবর, ওই গুজরাটি দম্পতির বাড়ির একটি দরজা বন্দ থাকলেও অপরটি ছিল খোলা।
ঘরের মধ্যে চলছিল টিভি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল খাবার। একনজরে দেখে বোঝার উপায়ই নেই এই ঘরেই খুন হয়েছেন ওই দম্পতি। যদিও পুলিশ জানাচ্ছে, ভালো করে খতিয়ে দেখে বোঝা গিয়েছে, খুনের আগে আততায়ীর সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয়েছে ওই দম্পতির।
গুজরাতি দম্পতি খুনে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। পুলিশ জানিয়েছে নিহত অশোক শাহ (৫৬)-এর দেহ যখন উদ্ধার করা হয় সেই সময় তিনি ছিলেন খালি গায়ে। পরনে ছিল একটি হাফ প্যান্ট। শরীরে একটি বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা থেকে গুলি করে খুন করেই খুন বলেই অনুমান। এদিকে, স্ত্রী রশ্মিতা শাহের (৫২) শরীরে ভোঁতা কোনও অস্ত্রের আঘাতও রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ফ্ল্যাটের মধ্যে আলমারির দরজা খোলা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। এমনকী রশ্মিতা শাহের হাতের বালা ও আংটিও গায়েব। ফলে লুঠে বাধা দেওয়াতেই এই খুন বলেও অনুমান। যদিও পরিচিত কোনও ব্যক্তি এই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
ছোট মেয়ে কাজের সূত্রে আগেই বাইরে বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে একা ছিলেন বয়স্ক দম্পতি। আর এক মেয়ে বারবার ফোন করেও দুপুর থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সন্দেহ হওয়ায় সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হরিশ মুখার্জি রোডের ফ্যাটে চলে আসেন তিনি। সদর দরজা খোলা দেখে ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই স্মিতা শাহের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন মেয়ে। এরপর বেডরুমের সামনে পড়ে থাকতে দেখেন বাবা অশোক শাহের মৃতদেহ।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে তা যথেষ্ট জনবহুল এবং ভবানীপুর থানা থেকেও দূরত্ব কয়েক মিনিটের। ভরসন্ধেয় এমন ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেই এলাকায়। বিকেল থেকে সন্ধের মধ্যে খুন হয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। এই ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার রাতেই সেখানে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং এলাকার কাউন্সিলর কাজরী বন্দোপাধ্যায়।