দেশের সময়: সে একটা সময় ছিল। স্কুলে গরমের ছুটি পড়লে মামাবাড়ি যেতাম। সেখানে আরও ভাই-বোনেরা অপেক্ষা করত আমাদের জন্য। তারপর হই হই করে কেটে যেত বেশ কয়েকটা দিন। পুজোর ছুটিটাও আমাদের কাছে দারুণ মজার ছিল।
বাড়িতে কত আত্মীয়স্বজন আসত। মা, জেঠিমার তখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই। পুকুর থেকে মাছ ধরা হত। হেঁশেলে কত কী যে রান্না হত, তার ইয়ত্তা নেই। অতিথি আপ্যায়নে যেন এতটুকু ত্রুটি না থাকে, কড়া নির্দেশ ছিল ঠাকুমার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গিয়েছে সেসব।
এখন আর ছেলেরা স্কুল ছুটির পর ডাং গুলি খেলে না। বাড়িভর্তি অতিথি আসে না। এলেও সেই ব্যস্ততা চোখে পড়ে না মা, জেটিমাদের। হাঁড়ি তো কবেই আলাদা হয়ে গিয়েছে। যৌথ পরিবার ভেঙে খানখান। কুটুম নয়, এখন গেস্ট। তাঁদের জন্য অনলাইনে অর্ডার করে ফাস্ট ফুড আনিয়ে নেওয়া হয়। কারণ, ঘড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছি আমরা। সময় নেই। ছুটতে ছুটতে যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছি আমরা।
আর আমাদের ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতি হয়েই রয়ে গিয়েছে। সেসব স্মৃতির গলিতে যদি একবার ঢুকে পড়েন, তাহলে নিশ্চয় খারাপ লাগবে না। বেনিয়াপুকুর যুবক সমিতি এবারের কালীপুজোয় স্মৃতিপট তুলে ধরছে তাদের মণ্ডপে। শিল্পী সোমনাথ তামলি।
এবার তাঁদের পুজো ৮০ তম বর্ষ। রবিবার এই পুজোর খুটিপুজো করেছেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে এলাকার ১০টি ক্লাবকে প্রেসার মাপার ডিজিটাল মেশিন দেওয়া হয়েছে।
বেনিয়াপুকুর যুবক সমিতির প্রতিমার আদল একইরকমের। মাতৃমূর্তি। প্রতিমা তৈরি করছেন প্রশান্ত পাল। পুজোর সময় নানা সামাজিক কাজকর্ম করে থাকে এই পুজো কমিটি। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে জানালেন পুজো কমিটির সম্পাদক আসিস সাউ।
বললেন, আমাদের এখানে দুর্গা নয়, কালীপুজোয় প্রধান উৎসব। এই পুজোর সঙ্গেই আমাদের একাত্মতা। এবারও পুজোর উদ্বোধনের দিন দুঃস্থ মানুষদের নতুন বস্ত্র দেওয়া হবে। অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের দেওয়া হবে সারা মাসের খাবারের সামগ্রী।