দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মতোই উত্তর ২৪পরগনার মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুরের বসুবাড়িতে ধুমধুমারে সঙ্গে পালিত হচ্ছে বাসন্তী পুজো। আচারে পুজোটি প্রায় শারদীয়া দুর্গা পুজোর মতোই। প্রভেদ শুধুমাত্র ‘ঘট স্থাপনের’ নিয়মে। পাঁচ দিন ধরে চলে এই পুজো। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, মেধা ঋষির পরামর্শে রাজা সমধি বৈশ্য ও রাজা সুরথ পূর্ব বঙ্গে এই পুজোর সূত্রপাত করেন। কালক্রমে তা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। উত্তর ২৪পরগনার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেল কোথাও স্বপ্নাদেশ থেকে পারিবারিক ভাবে কোথাও বা আবার এলাকাবাসীর চাহিদা মেনে বারোয়ারি বাসন্তী পুজোর সূত্রপাত হয়েছে।
শিবের যে দারিদ্র্য, তা আসলে বৈরাগ্যের নামান্তর। তাঁর স্ত্রী স্বয়ং অন্নপূর্ণা, অন্নদাতা, অথচ তিনি ভিখারি। এ এক অভূতপূর্ব বৈপরীত্য! একটা প্রবল প্যারাডক্স, ব্যঞ্জনাধর্মী ব্যাখ্যান। ধন নেই, তা বড় ব্যাপার নয়; ধন মহাদেবের প্রয়োজন নেই। দারিদ্র্যের মধ্যে তো তাঁর অতৃপ্তি নেই! তা বোঝানোর জন্যই তো তিনি শ্মশানচারী! যিনি সিদ্ধিতে নিপুণ, তাঁর পার্থিব ধন-সম্পদের প্রয়োজন আছে কি? অন্নের বেদিতে শুয়ে থাকতে পারে বৈরাগ্যই; যিনি ত্রিগুণাতীত। তা বোঝাতেই তিনি শ্মশানবাসী।
শিবপুজোর উপকরণ অতি সাধারণ। তাতে প্রকৃতির সহজ অমল সান্নিধ্য। যেমন আকন্দ, ধুতুরা, বেলপাতা, ভাটফুল, হরবরই, সিয়াকুল, বেল, কদবেল, নোনা, ফুটি ইত্যাদি ফুল ও ফল। দেশজ সংস্কৃতির শিকড় সংস্কৃতি চর্চাকালেও শিবের নামই উঠে আসে। আমাদের অন্ন সংস্থান দেশীয় পদ্ধতির উন্নত সংস্করণে হোক এই প্রার্থনা। অন্নলাভের জন্য প্রয়োজনের বাইরে যেন প্রকৃতিকে কলুষিত না করে ফেলি। অমৃত রূপ অন্নই দেবী অন্নপূর্ণা ।