দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মতুয়াদের মন পেতে গেরুয়া হাইকম্যান্ডের নয়া স্ট্র্যাটেজিতে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য।
মতুয়াদের বারুণী মেলায় বক্তব্য রাখবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৯ তারিখ মতুয়া ধর্ম মহামেলা এবং পুণ্যস্নান উপলক্ষে শুরু হওয়া মেলায় হরিচাঁদ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী । হরিচাঁদ ঠাকুরের আর্বিভাব তিথিতেই ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে হয় বারুণী মেলার আয়োজন।
একইসঙ্গে মোদীর এই পদক্ষেপে বঙ্গ বিজেপি-র প্রতিও বিশেষ বার্তা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মতুয়াদের আস্থা পেতে ক্ষুব্ধ নেতাকেও অগ্রাধিকার হাইকম্যান্ডের। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর শনিবার নিজেই জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের কর্মসূচি।একইসঙ্গে বলেন, এটা একটা বড় পাওনা।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু করার প্রতিশ্রুতি পেয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকে মতুয়াদের একটা বড় অংশ বিজেপিকে ভোট দিয়ে আসছেন। কিন্তু ২০১৯-এ সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল পাশ হওয়ার পরে তার বিধি তৈরির সময়সীমা নিয়মের বাইরে গিয়ে বার বার বাড়ানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও এখনও সিএএ-র বিধি তৈরি হয়নি। লোকসভায় বাজেট অধিবেশনের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, বিধি তৈরি না হওয়ায় সিএএ এখনও চালু হয়নি।
বঙ্গ বিজেপি-র ভাঙন স্পষ্ট হয় শান্তনু ঠাকুর হোয়াটস গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে আসায়। তারপর বারে বারে বঙ্গ বিজেপি-র পদক্ষেপ নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। মতুয়াদের দলের অন্দরে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এর সঙ্গে সিএএ চালু নিয়েও রয়েছে ক্ষোভ। সেই সমস্ত ক্ষোভেই প্রলেপ দিতে পারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ।
হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১১ তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে মতুয়াদের, ধর্মমেলা এবং পুণ্যস্নান। এইবছর বিরোধ দূরে সরিয়ে বনগাঁ বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর একসঙ্গে এই মেলার আয়োজন করছেন। যদিও অতীতে এই ইস্যুতে বারবার বিরোধ দেখা গিয়েছে ঠাকুরববাড়ির দুই সদস্যদের মধ্যে।
ধর্মমেলা উপলক্ষে শুধু রাজ্য নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন এই মেলায় যোগ দিতে আসবেন। মতুয়াদের ধর্ম মহামেলা অর্থাৎ বারুণী মেলায় যোগ দিতে আসা মানুষের জন্য ১৫টি বিশেষ ও এক্সপ্রেস ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।
শান্তনু বলেছেন, “এ বার আন্দামান থেকে মতুয়া ভক্তদের আসার জন্য জাহাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে ভক্তেরা জাহাজে খিদিরপুর হয়ে ঠাকুরবাড়িতে আসবেন।”
বাড়ানো হয়েছে বনগাঁ-শিয়ালদা রুটে ট্রেনের সংখ্যাও। প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-তে বন্ধ ছিল বারুণী মেলা। গতবছরও করোনার কারণে ছোট করে নামমাত্র আয়োজনে হয় মেলা। তাই দুবছর ফের মেলা স্বমহিমায় ফিরছে। ৪০ লাখেরও বেশি ভক্তের জনসমাগমের সম্ভাবনা।