দেশের সময় : উত্তর ২৪ পরগনা: ১১ বছর কেটে গেলেও ঝুলে রয়েছে বরুণ বিশ্বাস খুনের মামলা।
বৃহস্পতিবার বনগাঁ অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এন্ড সেশন জাজ ফাস্ট ট্রাক ১ আদালতে শুনানি ছিল। মূল সাক্ষী হিসাবে বরুণের বাবা জগদীশ বিশ্বাসের নাম থাকলেও তাঁকেই এদিন ডাকা হয়নি। এদিন কোর্টে উপস্থিত ছিলেন বরুণের দিদি প্রমীলা রায় বিশ্বাস। এই মামলায় সাক্ষী হতে চেয়ে তিনি আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
প্রমীলা রায়ের অভিযোগ, রাজ্য সরকার ও সিআইডি মামলায় অসহযোগিতা করছে। বরুণ হত্যা মামলায় যে ৫২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে, তারা বেশিরভাগই তাঁদের অপরিচিত। তিনি চান, তাঁদের পক্ষ থেকে যে পাঁচজন সাক্ষীর নাম দেওয়া হয়েছিল, এই মামলার সাক্ষী হিসেবে তাঁদের ডাকা হোক।
প্রমীলা দেবী বলেন, ”সিআইডি আমাদের কোনও সহযোগিতা করেনি। এই মামলা এগোতে আমি সাক্ষী দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার নাম নেয়নি। পরে বাবাকে সাক্ষী করে। কোভিডের সময় বাবাকে সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাই বাড়িতেই যাতে তাঁর বয়ান নেওয়া হয়, কোর্টের কাছে সেই আবেদন করেছিলাম। সেটাও খারিজ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে কোনও সমন পাঠানো হয়নি।“
এদিন কোর্ট চত্বরে দাঁড়িয়ে বরুণ খুনের ঘটনায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন প্রমীলা। তিনি বলেন, ”বরুণ বিশ্বাসের গতিবিধি আমি প্রথম থেকেই দেখেছি। বরুণ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লড়েছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দুষ্কৃতীদের পক্ষে ছিলেন।”
শুধু প্রমীলা রায় বিশ্বাসই নন, মামলার শুনানিতে পাবলিক প্রসিকিউটরের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বরুণ বিশ্বাসের পরিবারের আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, এত দিন হয়ে গেলেও এই মামলা কিছুতেই এগোচ্ছে না। এত বছরে চারবার পিপি বদল হয়েছে। শুনানি থাকলে অনেক সময়ে পিপি অনুপস্থিত থাকছেন। একপ্রকার লুকোচুরি খেলছেন পিপি। মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে না। এইভাবে আরও দেরি হয়ে যাচ্ছে।
গাইঘাটার সুটিয়ার প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস ৫ জুলাই ২০১২ সালে খুন হয়েছিলেন। ৫ জুলাই ২০১৩ থেকে মামলা শুরু হয়। মূল মামলা ছাড়াও আরও ৫ টি মামলা রয়েছে। ৫২ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। ৯ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরা সকলেই জামিনে মুক্ত। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়। এই চার্জশিটে চক্রান্তকারী হিসাবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর নাম বাদ যায়। যদিও বরুণের পরিবারের অভিযোগ, আইওকে হাত করেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল।