Bansdroni Shootout: কলকাতায় ফের দিনেদুপুরে শ্যুটআউট, সিন্ডিকেট বিবাদে গুলিবিদ্ধ দুই

0
487

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভরদুপুরে কলকাতার রাস্তায় প্রকাশ্যে চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখমও হলেন দুই ব্যক্তি। মঙ্গলবার বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরের ঘটনা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিন্ডিকেটের বখরা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘাতের মধ্যেই আচমকা গুলি চলে সেখানে। তাতেই গুলি লেগে গুরুতর জখম হন মলয় দত্ত এবং বিশ্বনাথ সিংহ নামের দুই ব্যক্তি। স্থানীয় সূত্রের খবর এঁরা দু’জনেই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। তবে বিবদমান গোষ্ঠীর সঙ্গে বিশ্বনাথের সম্পর্ক ছিল বহু দিন আগের। সম্প্রতি সেই সম্পর্কের অবনতি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যুটআউটের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দুই ব্যবসায়ী৷ আহত দু’ জনের নাম মলয় দত্ত ও বিশ্বনাথ সিং ওরফে বাচ্চা৷ আহত মলয় দত্ত এই মুহূর্তে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ আর এক আহত ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ সিং ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি৷

জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধ দুই ব্যবসায়ী মলয় দত্ত ও বিশ্বনাথ সিং একসময় একসঙ্গে জমি কেনাবেচার কাজ করতেন৷ রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা উত্তম মণ্ডল নামে এক প্রমোটারের হয়ে কাজ করতেন তাঁরা৷ কিন্তু কিছুদিন আগে বিশ্বনাথকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেন উত্তম৷

সূত্রের খবর, বাঁশদ্রোণী থেকে নরেন্দ্রপুর পর্যন্ত বেশ কিছু জমি কেনা ছিল মলয় ও বিশ্বনাথের৷ কিন্তু ব্যবসায়িক বিচ্ছেদের পরে মলয় সেই জমিগুিল উত্তম মণ্ডলকে বিক্রি করতে শুরু করে বলে অভিযোগ৷ এই খবর পেয়েই বিশ্বনাথ মলয়ের কাছে জমি বিক্রি বাবদ নিজের প্রাপ্য অর্থ দাবি করে৷ এই নিয়েই বেশ কিছুদিন ধরে দু’ জনের মধ্যে বিবাদ চলছিল বলে স্থানীয় সূত্রে খবর৷

জানা গিয়েছে, বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে এ দিন বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুরে নিজের অফিসে বিশ্বনাথকে ডেকে পাঠায় মলয়৷ অভিযোগ, আগে থেকে সেখানে সশস্ত্র দু’ তিনজন যুবককে তৈরি রেখেছিল মলয়৷ বিশ্বনাথ সিং আসার পর আলোচনা শুরু হতেই ফের দু’ পক্ষে বচসা বাঁধে৷ অভিযোগ, তখনই মলয়ের অফিসে থাকা ওই যুবকরা বিশ্বনাথ সিংকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়৷ তার পিঠে গুলি লাগে বলে অভিযোগ৷

পাল্টা মলয়কে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিশ্বনাথও৷ গুলি লাগে মলয় দত্তের বুকের ডানদিকে৷ গুলির শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা৷ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় বাকিরা৷ খবর যায় পুলিশে৷ আহত মলয় দত্তকে প্রথমে এম আর বাঙ্গুর এবং পরে সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ গুলিবিদ্ধ বিশ্বনাথ সিং-কে গড়িয়ার কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ৷

স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ দাসের অবশ্য দাবি, পুরোপুরি ব্যবসায়িক শত্রুতা থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে৷ এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই৷ যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর, আহত দুই ব্যবসায়ীই তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসেবেই এলাকায় পরিচিত৷

মলয় দত্তের স্ত্রী মৌসুমী দত্তের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, তাঁর স্বামীর  অফিসে ঢুকে গুলি চালিয়েছে বিশ্বনাথ সিং-ই৷ মলয় এবং বিশ্বনাথ ছোটবেলার বন্ধু ছিল বলে জানিয়েছেন মৌসুমীদেবী৷ তাঁর আরও দাবি, বিশ্বনাথের কাছে ২২ লক্ষ টাকা পাওনা ছিল মলয়ের৷

ঘটনাচক্রে, সোমবারই লেক গার্ডেন্সে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের বাড়ির কাছে সিন্ডিকেটের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ধুন্ধুমার বেধেছিল। সেই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত সাংসদকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়। যে বাড়ি ভাঙা নিয়ে বিবাদ চলছিল, সেই বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখতে পুলিশকে অনুরোধ করেন সৌগত। তারও আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেহালায় সিন্ডিকেটের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

চড়ক মেলার দখলদারিকে কেন্দ্র করে হওয়া ওই ঘটনায় জখম হন বেশ কয়েক জন। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ফের প্রকাশ্যে এল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এ বার ঘটনাস্থল বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুর। এমনিতে শান্তিপূর্ণ এলাকা বলে পরিচিত ব্রহ্মপুরে গত কয়েক বছর ধরেই জমি বিক্রি এবং আবাসন নির্মাণের কাজ বেশ জোরদার শুরু হয়েছে। সেই সূত্রে সিন্ডিকেটের রমরমাও বেড়েছে এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ব্রহ্মপুর এলাকাটিতে উত্তম মণ্ডল নামে এক প্রমোটারের দীর্ঘ দিনের প্রতিপত্তি। উত্তমের গোষ্ঠীর সঙ্গেই সংঘাত বাধে আর একটি সিন্ডিকেট গোষ্ঠীর। যার নেতার নাম বিশ্বনাথ ওরফে বাচ্চু। পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে উত্তমের নাম পুলিশের খাতায় উঠে যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই উত্তমের খোঁজ করছে পুলিশ।

Previous articleRape Case: পাঁচ ধর্ষণ-‌কাণ্ডে তদন্ত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের‌
Next articleDeganga Workers Death: কর্নাটকে কাজ করতে গিয়ে মৃত শ্রমিকদের পারিবারকে আর্থিক সাহায্য রাজ্যের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here