দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫৪তম বর্ষ পালন করবে বাংলাদেশ। তার আগে শুক্রবার রাত থেকে দেশের নানা জায়গায় সভা-সমাবেশ করল আওয়ামী লিগ। ঢাকা-সহ দেশের সব বড় শহরে একাধিক সভা হয়। কোথাও কোথাও পুলিশ ও সেনা এসে বাধা দিলেও বেশিরভাগ জায়গায় তা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ক’দিন আগেও আওয়ামী লিগের সভা-সমাবেশে হামলা করেছে পথচলতি মানুষ। এমন অনেকেই শুক্রবারের সভায় ভিড় করেছেন। শুনেছেন আওয়ামী লিগের স্থানীয় নেতাদের কথা।
ঢাকার একাধিক সরকারি সূত্র বলছে, কীভাবে আওয়ামী লিগ এভাবে সভা করতে পারল তা নিয়ে সরকারের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। গোয়েন্দা ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছেন উপদেষ্টারা অনেকেই।
শেখ হাসিনার দলের আচমকা রাজপথে গর্জন নিয়ে প্রশাসনের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামির আমির শফিকুল রহমান। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লিগকে রাজনীতিতে ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিছু লোক আওয়ামী বিরোধী মুখোস পরে হাসিনার দলের হয়ে কাজ করছে।
আওয়ামী লিগ সূত্রের খবর, বিজয় দিবসকে সামনে রেখে দল একাধিক সভা-সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউনুস সরকার দিনটির গুরুত্ব খাটো করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। রাজনীতির বাইরে থাকা মানুষও এতে বিরক্ত।
‘জয় বাংলা’-কে জাতীয় স্লোগান হিসাবে মানতেও আপত্তি করেছে ইউনুস সরকার। তাতেও বিরক্ত দেশবাসী। আওয়ামী লিগ দেশবাসীর এই আবেগকে মর্যাদা দিতেই ঝুঁকি নিয়ে পথে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউনুস সরকারের ভয়ে স্থানীয় মিডিয়া আওয়ামী লিগের এই কর্মসূচির খবর প্রকাশ করেনি।
ইউনুস সরকার এবার বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, সেনা বাহিনী দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যস্ত বলে কুচকাওয়াজ বন্ধ রাখা হচ্ছে। যদিও এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় দেশবাসী। অনেকেই মনে করছেন, পাকিস্তানের প্রতি সখ্যের বার্তা দিতেই ইউনুস সরকার কুচকাওয়াজ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কারণ, ১৬ ডিসেম্বর হল পাকিস্তানের জন্য এক চরম অস্বস্তিকর দিন। ১৯৭১ সালের ওই দিন ভারতীয় সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্ম সমর্পণ করে পাক সেনা বাহিনী। এর আগে একমাত্র করোনার বছরগুলি বাদে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কখনও বন্ধ থাকেনি বাংলাদেশে।
দিনটি ভারতীয় সেনা বাহিনীও বিজয় দিবস হিসাবে পালন করে। লক্ষণীয় হল, কলকাতায় ভারতীয় সেনার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানেও মুক্তিযোদ্ধাদের পাঠাতে গোড়ায় গড়িমসি করেছে ইউনুস সরকার। ভারতের বিদেশ সচিবের ঢাকা সফরের পর সিদ্ধান্ত বদলের আভাস মিলেছে। পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর সূত্রের খবর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল কলকাতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারে।