দেশের সময় , বনগাঁ: উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ শিমুলতলা এলাকায় জনৈক মন্টু দাসের বাড়িতে শুক্রবার রংয়ের কাজ করতে এসেছিলেন বনগাঁ ভবানীপুরের বাসিন্দা শ্যামল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি। সেখানেই এদিন দুপুরে রংয়ের কাজ করবার সময় বাঁশের ভাড়া ভেঙে পড়ে যান ওই রং মিস্ত্রী । গুরুতর অবস্থায় তাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, গুরুতর অবস্থায় পড়ে থাকলেও শ্যামল বিশ্বাসকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৎপরতা দেখাননি বাড়ির মালিক মন্টু দাস, এমন অভিযোগ তুলে মন্টু দাসের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনগাঁ থানার পুলিশ৷ এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা কমাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার রং মিস্ত্রি শ্যামল বিশ্বাস ওই বাড়িতে রং করার সময় বাঁশের ভাড়া ভেঙে পড়ে যান। অসাবধানতাবশত এই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু অনেকক্ষণ আহত অবস্থায় পড়ে থাকলেও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি বাড়ির মালিক মন্টু দাসের মধ্যে, এমনটাই অভিযোগ। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথেই প্রাণত্যাগ করেন ওই ব্যক্তি। এরপরেই মন্টুর বাড়ি সামনে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বাঁশের ভাড়া ভেঙে এক মিস্ত্রীর পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর আমরা এখানে ছুটে আসি। এসে দেখি উনি আহত অবস্থায় পড়ে আসছেন। কিন্তু বাড়ির মালিকের ওদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। এই বিষয়ে বাড়ির মালিককে বললে তিনি বলেন অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছি।” এই বলে বাড়ির মালিক দায় ঝাড়েন বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যতক্ষণে ওই আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই, ততক্ষণে উনি মারা গিয়েছেন। যদি আরও আগে ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা যেত, তাহলে উনি হয়ত বেঁচে যেতেন।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাড়ির মালিক মন্টু দাস। তিনি বলেন, “ভাড়াটি ভালো করে বাঁধতে পারেননি শ্যামলবাবু।
তাই পড়ে যান। উনি পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি অ্যাম্বুলেন্স ডাকি যাতে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি। কিন্তু তারমধ্যেই এলাকার কিছু মানুষ এসে ঝামেলা শুরু করে দেয়। তাতে ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে আরও দেরি হয়ে যায়।” যদিও সব পক্ষের বক্তব্য শুনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।