দেশের সময় , বনগাঁ: এবার প্রতারণার অভিযোগে নাম জড়ালো এক তৃণমূল নেত্রীর। পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে দেওয়ার নামে লক্ষ-লক্ষ টাকা তোলার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে।
অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার নাম করে স্থানীয় এক বাসিন্দার থেকে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা রায়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বাগদায় হুলস্থূল পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে!
যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সভাপতি। তবে বিষয়টি নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ওই পরিবারটি।
বাগদার হরিহরপুরের বাসিন্দা আজমিরা মণ্ডলতৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, গত ১৭ এপ্রিল রাতে বাগদা থানার পুলিশ বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্বামী আতিয়ার মণ্ডলকে তুলে নিয়ে যায়। পর দিন সকালে স্থানীয় নাসির বিশ্বাস নামে এক যুবকের কাছে আজমিরা এবং তাঁর ছেলে জসিমউদ্দিন মণ্ডল যান।
আজমিরার দাবি, নাসির তাঁদের বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা রায়ের কাছে নিয়ে যান। আজমিরার দাবি, স্বামীকে ছাড়িয়ে আনার জন্য তাঁদের থেকে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। না হলে আতিয়ারের বিরুদ্ধে ‘গাঁজা কেস’-এ মামলা রুজু করা হবে বলেও হুমকি দেন বলে অভিযোগ।
আজমিরার ছেলে জসিমউদ্দিনের বক্তব্য, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। টাকা কোথায় পাব? তবুও আমি গয়না বন্ধক রেখে নাসির এবং গোপার হাতে মোট এক লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। তা-ও পুলিশ বাবাকে ছাড়েনি। উপরন্তু মারধর করে ডাকাতির মামলা রুজু করেছে বাবার বিরুদ্ধে। আবার ওরা এখন বলছে, ‘আরও ৩০ হাজার টাকা লাগবে।’ আমি চাই, বাবা যেন বাড়ি ফিরে আসে। ওদের যে টাকা দিয়েছি তার প্রমাণ আছে আমার কাছে। হোয়াটসঅ্যাপে আমাদের মধ্যে যে কথাবার্তা হয়েছিল তার স্ক্রিন শট আছে আমার কাছে।’’
গোপার বক্তব্য, ‘‘শুধু নাসির বিশ্বাস কেন, যদি কেউ আমার নাম করে টাকা নেয়, তা হলে তার যেন শাস্তি হয়। তবে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। তা তিনি যেই হন না কেন। টাকা নেওয়া হয়েছে কি না জানি না। আমি গোটা বিষয়টার কিছুই জানি না। আমি অন্ধকারে।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘দলটাই কাটমানির দল। দলটাই চোরদের দল। ওদের দলের ব্যাপার আমার কিছু বলার নেই।’’
তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠের বক্তব্য, ‘‘আমার কাছে একটি অভিযোগ এসেছিল। তা তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি। আমদের দল স্বচ্ছ। দোষ প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আজমিরার বক্তব্য দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের একনিষ্ঠ সমর্থক তাঁরা। তবু তাঁদের সঙ্গে এই অনাচার হল। নগদ অর্থ ফেরত চাইতে গেলে নাসির বিশ্বাস ‘পারলে আদায় করে নিস’ বলে হুমকিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
এদিকে পঞ্চায়েত সভাপতি গোপা রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য তিনি এসবের কিছুই জানেন না। পুলিশ তদন্ত করুক। দোষ করলে মাথা পেতে তার শাস্তি তিনি নেবেন।