দেশের সময়: পরিবার, মায়ের আঁচল, সবুজ সাথী, অগ্নিপরীক্ষা, চোরে চোরে মাসতুতো ভাই, মহাগুরু…। তালিকা দীর্ঘ। প্রায় চারশো ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বাংলার সেই প্রখ্যাত মিউজিক ডাইরেক্টর অশোক ভদ্র এখন বাংলাগানের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো সংশয় প্রকাশ করছেন।
আমেরিকায় বঙ্গ উৎসবে যোগ দিতে গেলেন তিনি।
রওনা হওয়ার আগে ‘দেশের সময়’-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, কিছু মুখোরোচক গান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝেমধ্যে ভাইরাল হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এসব গান টেকার নয়। টিকছেও না। অশোক ভদ্রের কথায়, বাংলাগানকে বাঁচাতে গেলে মৌলিক গান দরকার। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতো কালজয়ী শিল্পীরা যে সব গান উপহার দিয়ে গিয়েছেন, সেই ধারা বজায় রাখা খুব দরকার। আর এজন্য শিল্পীদের ঝুঁকি নিতে হবে। শুধু পুরনো গানকে নতুন মোড়কে না গেয়ে নতুন গান, মৌলিক গানও গাইতে হবে। না হলে বাংলাগানের সুসময় ফেরানো মুশকিল। দেখুন ভিডিও
বর্তমানে দু’টি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন অশোক ভদ্র। তার একটি সুজিত চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘দুরন্ত’, অন্যটি তাপস দত্তের পরিচালনায় ‘চুপি চুপি ভালোবাসা’। হাতে রয়েছে কিছু হিন্দি গানের কাজও। অশোক ভদ্রের কথায়, সব ধরনের গান গাইতে হবে। সেইসঙ্গে মাটির গানকে ভুললে চলবে না।
লোকসঙ্গীত শিকড়ের গান। এই গান দিয়েই বাংলাকে চেনানো সম্ভব। ফলে মাটির গানকে আরও বেশি করে মানুষের মাঝে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য শিল্পীদের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া জরুরি।
বাংলার নবীন ও প্রবীণ সঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার কাজে হাত দিতে চান অশোক ভদ্র। বললেন, কিছু শিল্পী রয়েছেন, যাঁরা সারাবছর কাজ পান। আবার অনেক গুণী শিল্পী রয়েছেন, যাঁরা বছরভর অপেক্ষা করেও কাজ পান না। ছবিতে প্লেব্যাক করার সুযোগ পান না। যাঁরা কাজ পাচ্ছেন আর যাঁরা পাচ্ছেন না, তাঁদের সবাইকে নিয়ে একটা অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়ার ইচ্ছে রয়েছে।
অশোক ভদ্র বলেন, ৩৫ বছর ধরে সঙ্গীত জীবনের সঙ্গে গানের জগতে রয়েছি। শিল্পীদের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই ওই মঞ্চ গড়তে চাই। সবাইকে নিয়ে কোরাস গানের অ্যালবাম গড়ারও ইচ্ছে আছে। নবীন ও প্রবীণ শিল্পীদের মেলবন্ধনেই বাংলাগানের সুদিন ফিরবে বলে আশাবাদী অশোক ভদ্র।