দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শনিবার বিকেল থেকে রাত ব্যারাকপুর, জগদ্দল, পলতা, ইছাপুর, কাঁকিনাড়া, ভাটপাড়াজুড়ে ফ্লেক্স, হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি মাথার উপর। তার নীচে হাত জোড় করা অর্জুন সিং ৷ কোনওটায় আবার অর্জুন সানগ্লাস চোখে। সাদা জামা-সাদা প্যান্ট পরে হেঁটে আসছেন। ব্যাকগ্রাউন্ডে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মুখ। যেন বোঝানোর চেষ্টা– বাঘ বাঘই থাকে। সে পদ্মবন হোক বা ঘাসফুল!
পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র। তার পরেও অনুযোগের সুর ধরে রেখেছিলেন তিনি। এ বার উথালপাথাল সমুদ্রেই নোঙর বাঁধতে চলেছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ ! তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাতে নতুন করে বিজেপি-র সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। শীঘ্রই তিনি তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন বলে জল্পনা তুঙ্গে। অর্জুন নিজে যদিও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেই ক্ষান্ত। দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে কোনও কথা বলেননি তিনি।
শনিবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে কবি মনের প্রকাশ ঘটান অর্জুন। শায়েরির আকারে হিন্দিতে লেখেন, ‘শুনলাম সমুদ্র নাকি আত্ম অহঙ্কারে মগ্ন, যেথা ঝড় নেমেছে, সেথাই বরং নৌকা নিয়ে চল।’ শনিবারের কালবৈশাখী অর্জুনের মনে শায়েরির উদ্রেক ঘটিয়েছে, এমন নয়, বরং এই শায়েরির মধ্যে বিজেপি-তে নিজের মনের মধ্যে বয়ে যাওয়া ঝড়েরই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
सुना है आज समंदर को खुद पे गुमान आया है,
— Arjun Singh (@ArjunsinghWB) May 21, 2022
उधर ही ले चलो कश्ती जहाँ तूफान आया है।
ঘটনাচক্রে এ দিনই, রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা তাপস রায় অর্জুনের ‘ঘর ওয়াপসি’র সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খোলেন। জানান, অর্জুনকে ফেরত নেওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
কিন্তু তৃণমূলে ফইরে এসে ফের যেন অর্জুনের মন বদল না হয়, ফের যেন তিনি বেরিয়ে না যান, ব্যারাকপুরের সাংসদের উদ্দেশে বার্তা দিতে শোনা যায় তাঁকে। তাই অর্জুনের শায়েরি এবং তাপসের মন্তব্য মিলিয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিচ্ছে রাজনৈতিক মহল।
বেশ কিছু দিন ধরেই বিজেপি-তে ‘বেসুরো’ বাজছেন অর্জুন। কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে প্রকাশ্যেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। তার জন্য দিল্লিতেও ডাক পড়ে তাঁর। দাবি মেনে পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহারও করে নেয় কেন্দ্র। কিন্তু তার পরও মন ভেজেনি অর্জুনের।
বারং বার জানিয়েছেন, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বিজেপি-তে এসেছেন বটে, কিন্তু কাজ করতে পারছেন না। এমনকি ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার করে বিজেপি-তে তাঁকে রেখে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন অর্জুন। তখন থেকেই তাঁর তৃমমূলে প্রত্যাবর্তনের জল্পনা জোর পাচ্ছিল।