সিবিআই ‘ফলস’ কেস সাজিয়েছে, অভিযোগ কেষ্টর
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একমাসেরও বেশি সময় হয়ে গিয়েছে তিহাড় জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ইডি গ্রেফতার করার পর দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গরু পাচার-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত অনুব্রতকে। কিন্তু আসানসোল আদালতে এখনও চলেছে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া সিবিআই-এর মামলা।
প্রায় আড়াই বছর শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যু হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর। তার পর মেয়ে সুকন্যার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন কেষ্ট মণ্ডল। বলেছিলেন, আড়াই ফুট চওড়া খাটে মেয়েটা মায়ের সঙ্গে কীভাবে কাটিয়েছে, তা শুধু আমি জানি। এমন মেয়ে সবার ঘরে হোক!
বুধবার সেই অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে গরু পাচার কাণ্ডের তদন্ত সূত্রে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তথা ইডি । বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে আদালতে পেশ করে হেফাজতে চাইবে কেন্দ্রীয় এই তদন্ত এজেন্সি। তারই মধ্যে এদিন আবার শুনানি ছিল অনুব্রত মণ্ডলের।
তিহাড় থেকে এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানিতে যোগ দেন অনুব্রত ও তাঁর একদা দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। বিচারক প্রথমে তাঁর কাছে জানতে চান, কেমন আছেন? শুনে অনুব্রত বলেন, একদম ভাল নেই। একদম না।
তাঁর ‘অনেক সমস্যা’ রয়েছে বলেও জানান তিনি। এর পর বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনি যে আসানসোল জেলে ফেরার আবেদন করেছিলেন দিল্লি হাইকোর্টে তার স্ট্যাটাস কী?’’ উত্তরে অনুব্রত বলেন, ‘‘স্যর এখনও সেটা চলছে। আমাকে আসানসোল জেলে ফেরত চেয়ে নিন।’’ তার জবাবে বিচারক বলেন, ‘‘ওটা তো হাইকোর্টের বিষয়। আমার হাতে নেই।’’
এর পর বিচারক আবার অনুব্রতকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘এমনি কেমন আছেন?’’ উত্তরে অনুব্রত বলেন, ‘‘ঠিক আছি।’’
তিহাড় থেকে আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে মামলা করে রেখেছেন অনুব্রত। বিচারক এদিন জানতে চান সেই মামলার কী অবস্থা? জবাবে অনুব্রত বলেন, মামলা চলছে। আদালত চাইলে তাঁকে আসানসোলে ফেরত পাঠাতে পারে। সেই সঙ্গে অনুব্রত অভিযোগ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ফলস কেস সাজিয়েছে সিবিআই। সব মামলা মিথ্যা। এ কথা বলে জামিন চান অনুব্রত।
বিচারকের প্রশ্ন, ‘তিহার জেলে কেমন আছেন? যদি কোনও অসুবিধা হয় জেল সুপারকে জানাবেন। ওখানে পরিবেশ তো একটু আলাদা। কোনও রকম দ্বিধা সংকোচ করবেন না।’ বিচারক আরও জানান, সিবিআই সমস্ত নথির কপি অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীর হাতে দিয়ে দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ মে।
বিচারক শুনে বলেন, তিনি অনুব্রত মণ্ডলের কথা শুনলেন ঠিকই। কিন্তু এ সব কথা অর্থহীন। আদালতের কাছে শুধুমাত্র কাগজেরই মূল্য রয়েছে।
অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেন ছাড়াও এই মামলায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মনীশ কোঠারিকে। তার পর এবার মেয়ে সুকন্যাকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। অর্থাৎ বীরভূমে কেষ্টর কাছের লোক আর কেউ এখন বাইরে নেই। সবাই হয় জেলে নয় হেফাজতে রয়েছে।