Aftab Amin Poonawalla: ফ্রিজে শ্রদ্ধার কাটা মাথা রেখে ওই বাড়িতেই একাধিক মহিলার সঙ্গে উদ্দাম যৌনতায় মাততেন আফতাব

0
1050

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সন্ধের দিকে বেল বাজল দিল্লির ছত্তরপুর পাহাড়ি এলাকার ৯৩/১ নম্বর বাড়িতে। দরজা খুলে দিল এক যুবক। ভিতরে ঢুকল তরুণী। কয়েক দিন আগেই ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয়েছে তাদের। ঘরের ভিতরে বেডরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করল তারা।

আর ঠিক সেই দরজার বাইরেই আলো-আঁধারিতে দাঁড়িয়ে রইল একটি ফ্রিজ। নতুন কেনা হয়েছে সেটি। সদ্য আসা মেয়েটি জানে না, ওই ফ্রিজেই রয়েছে তারই মতো এক তরুণীর কাটা দেহের টুকরো ! আফতাব আমিন পুনাওয়ালা নামের যে যুবকের সঙ্গে সে সময় কাটাচ্ছে, যৌনতায় লিপ্ত হচ্ছে, কয়েক সপ্তাহ আগে সে-ই খুন করে কুপিয়েছে শ্রদ্ধা বিকাশ ওয়াকার নামের ওই তরুণীকে। তার পরে মাংসের টুকরো কাটার মতো কেটে, একাধিক প্লাস্টিকে মুড়ে, রেখেছে ওই নতুন কেনা ফ্রিজের ভিতরেই!

দিল্লিতে তরুণীর নৃশংস খুনের তদন্তে একের পর এক পরত খুলছে। চমকে উঠছেন পুলিশ আধিকারিকরাও। তাঁরা জেনেছেন, শ্রদ্ধাকে খুন করে ফ্রিজে রাখার পরে এভাবেই একের পর এক মেয়েকে ঘরে নিয়ে আসত খুনি আফতাব । এছাড়াও নানা সময়ে আসত তার বন্ধুবান্ধব, খাবার ডেলিভারি দিতে আসা কর্মী, কাজের লোক।

কেউই জানত না, নতুন ফ্রিজে কী আছে! পুলিশ জানিয়েছে, ঘরে সবসময় কড়া গন্ধের রুম ফ্রেশনার দিয়ে রাখত আফতাব। বিভিন্ন জায়গায় ব্লিচের দাগ। এভাবেই নিজের কীর্তিকে লুকিয়ে রাখত আফতাব।


মুম্বইয়ের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কল সেন্টারে কাজ করতেন ২৬ বছরের শ্রদ্ধা। দিল্লির বাসিন্দা আফতাবের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিস তাঁর। তার পরে মুম্বই থেকে দিল্লিতে এসে আফতাবের সঙ্গে থাকতে শুরু করে তিনি। এর পরে ছ’মাস আগে নিজের
শ্রদ্ধাকে খুন করে ৩৫ টুকরোতে কেটে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছিল প্রেমিক আফতাব।

বাকি টুকরো রেখেছিল ফ্রিজে। এদিকে মেয়ের সঙ্গে অনেক দিন ধরে যোগাযোগ করতে না পারায় দিল্লি পুলিশে মিসিং ডায়েরি করেন শ্রদ্ধার বাবা, তার পরেই সেই খুনের ঘটনায় শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।

তদন্তকারীদের অনুমান, শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার সময়েও নিয়মিত ডেটিং অ্যাপে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ত আফতাব। এই নিয়েই সম্ভবত ঝামেলা লেগে থাকত তাদের মধ্যে। এই ঝামেলা বাড়তে বাড়তেই খুনোখুনি পর্যন্ত পৌঁছয়।

এক সিনিয়র অফিসারের কথায়, “শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্কে থাকার সময়েও আফতাব নিয়মিত বাড়িতে মেয়ে নিয়ে আসত ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। শ্রদ্ধা মোটেও তা পছন্দ করত না। এই নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকত তাদের মধ্যে। আফতাব জেরায় বলেছে, শ্রদ্ধা তাকে নিয়ে ‘পজেসিভ’ ছিল। এমনকি তার দাবি, শ্রদ্ধাও একই ভাবে অন্যান্য পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করত ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে। পরে আফতাব পুলিশের কাছে স্বীকার করে নেয়, শ্রদ্ধাকে মেরে ফ্রিজে ভরে রাখার পরেও ওই বাড়িতেই বহুবার অচেনা মেয়েকে নিয়ে এসেছে।”

এসবের পাশাপাশি শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলির প্রতি ‘যত্ন’ নিতেও ভোলেনি আফতাব। পুলিশ জানিয়েছে, নতুন ফ্রিজ কেনাই শুধু নয়, যখন ফ্রিজ থেকেও একটু গন্ধ বেরোতে শুরু করে, তখন অনলাইনে ব্লিচ কিনে এনেছিল সে। দেহের প্রতিটি টুকরো ধুয়েছিল ভাল করে। আর এই সবটাই সে করেছিল অনলাইন ওয়েব সিরিজ দেখে আর গুগল ঘেঁটে।

পুলিশি জেরায় আফতাব স্বীকার করেছে,
আমেরিকার জনপ্রিয় অপরাধমূলক ওয়েবসিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখেই শ্রদ্ধাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল সে। গুগল সার্চ করে দেখার চেষ্টা করেছিল কীভাবে দেহ টুকরো টুকরো করতে হয়, কীভাবে মাটিতে রক্তের দাগ পরিষ্কার করতে হয়।

মানব শরীরের গঠন নিয়েও ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করেছিল সে। গতকাল রাতেই আফতাবের মোবাইল, ল্যাপটপ সহ সমস্ত ইলেকট্রনিক গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করে দিল্লি পুলিশ। ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিন ঘেঁটে বহু জরুরি তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। শ্রদ্ধাকে খুনের আগে আফতাব কী কী ধরনের ওয়েব সিরিজ দেখেছে তাও খুঁজে বের করেছে পুলিশ। তাতে দেখা গেছে, শুধু ডেক্সটার নয়, লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুনের আগে আফতাব একাধিক অপরাধমূলক ছবি ও ওয়েব সিরিজ দেখেছিল। তারপরেই হত্যার ছক কষেছিল সে। দেহ সংরক্ষণের জন্য কিনেছিল একটি নতুন রেফ্রিজারেটর।

পুলিশকে আফতাব এ-ও জানিয়েছে,  শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলার জন্য, গুগলে মানব দেহের গঠন নিয়ে পড়াশোনা করেছিল সে। সেই সঙ্গে কী কী রাসায়নিক দিয়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলা যায়, তাও গুগল করেই জেনেছিল। সেই রাসায়নিক দিয়ে মেঝে থেকে রক্তের দাগ পরিষ্কার করার পররক্তমাখা কাপড়গুলি সে ফেলে দিয়েছিল। 

অফিসার আরও বলেন, “আমরা শ্রদ্ধার দেহের কয়েকটি টুকরো উদ্ধার করেছি। বিশ্রীভাবে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলি। পাওয়া গেছে কিছু হাড়গোড়ও সব পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। শ্রদ্ধার বাবার নমুনা নিয়ে ডিএনএ টেস্ট করেও মেলানো হবে সেসব।”

দিল্লিতে শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনে এবার ‘লাভ জিহাদ’ -এর অভিযোগ! আফতাব আমিন পুনাওয়ালার এই ভয়ঙ্কর কাণ্ডের নেপথ্যে ‘লাভ জিহাদ’ -এর চক্রান্ত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়ালকার। সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্রদ্ধার বাবা জানিয়েছেন, “এই ঘটনার নেপথ্যে লাভ জিহাদ থাকতে পারে বলে আমার আশংকা। দোষীর ফাঁসি চাই আমরা।” শ্রদ্ধা এবং আফতাবের সম্পর্ক কোনও দিনই মেনে নেয়নি পরিবার। তবে দীর্ঘদিন মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। দিল্লি এসে অভিযোগ দায়েরর পরেই ১২ নভেম্বর গ্রেফতার করা হয় শ্রদ্ধার লিভ ইন পার্টনার আফতাবকে।

Previous articleGhattamaneni Siva Rama Krishna: প্রয়াত দক্ষিণী সুপারস্টার কৃষ্ণ মূর্তি
Next articleMamata Banerjee: ‘ওরে আমি জানি, বাড়িতে রান্না করি তো’- বলেই আধঘণ্টার মধ্যে ১০০ চপ বিক্রি করলেন মমতা! অবাক বুদ্ধদেব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here