দেশের সময় , ঠাকুর নগর : তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচিতে এই মুহূর্তে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় রয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উপলক্ষ্যে জেলা সফরে মতুয়া সম্প্রদায়ের পিঠস্থান ঠাকুরনগর ঠাকুর বাড়িতেও আসবেন অভিষেক। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি বীণাপাণি দেবী অর্থাৎ বড়মার ঘর সহ গোটা মন্দির এলাকা ঘুরে দেখার কথা রয়েছে তাঁর। আর তাঁর আসার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পোস্টার লক্ষ্য করা গিয়েছিল মন্দির চত্বর এলাকায়।
এবার রীতিমতো ঠাকুর বাড়িতে নব জোয়ার যাত্রা আটকাতে ময়দানে নামলেন মতুয়ার সম্প্রদায়ের এক অংশের মানুষ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসার আগেই দেখা যায় মন্দিরে বসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে মতুয়াদের। মতুয়া ভক্তরা বিক্ষোভ দেখান কালো পতাকা নিয়ে। সেই সঙ্গে কিছু মুহুর্তের জন্য ভক্তদের মধ্যে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়ে যায়৷
ঘনঘন স্লোগান তোলা হয় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। আর তা নিয়েই উত্তপ্ত হয়ে উঠল ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি। যদিও শাসক দলের তরফ থেকে মন্দির চত্ত্বরে সাজিয়ে তোলা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার জন্য। বড়মার মন্দিরও ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
তবে তার মাঝেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে মঞ্চে দেখা যায় স্বয়ং বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে। মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মানুষ বলছেন, মন্দিরে প্রবেশ করতে দেবেন না অভিষেককে। নিরাপত্তার খাতিরে পুলিশকেও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।
অতীতে করা কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য যতক্ষণ না পর্যন্ত ক্ষমা চাইবেন মুখ্যমন্ত্রী, ততক্ষণ ধরেই এই বিক্ষোভ প্রদর্শন চলবে বলেও জানা গিয়েছে। কোনোভাবেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না, এখন তেমনটাই জানাচ্ছেন মতুয়া ভক্তরা।
উত্তেজনা হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে জেলা প্রশাসনের তরফে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি চত্ত্বরে। এদিন শান্তনু ঠাকুর বলেন, “ঠাকুরবাড়িতে কেউ প্রণাম করতে এলে কি ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করতে হয়!”
নাম না করেই তিনি অভিষেককে কটাক্ষ করেন। এছাড়াও তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন
কিন্তু তাঁদের জন্যও এত নিরাপত্তা দেখা যায়নি। ঠাকুরবাড়ি মতুয়াদের বড় ধাম। আবার এখানে আমরা থাকিও। তাই আমার বাড়িতে যদি এত পুলিশ এসে আমার লোকজনকে বিরক্ত করে, আমি তাদের সঙ্গে সহজ ভাষায় কথা বলব না, এটাই স্বাভাবিক। এটা ঠাকুরবাড়ি, থানা নয়।”
পাশাপাশি শান্তনু ঠাকুর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এলে তারপরই গোবর দিয়ে শুদ্ধিকরণ করা হবে গোটা মন্দির। গোটা ঘটনাকে ঘিরে এখন উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে। এখন দেখার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা ও মতুয়া ভক্তরা।